মহাকাশে, আমাদের সৌরজগতের বাইরে, বিজ্ঞানীরা ‘ট্যাটুয়িন’-এর মতো একটি গ্রহ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছেন। ছায়াপথের এই অচেনা জগৎে দুইটি ‘বাদামী বামন নক্ষত্র’কে কেন্দ্র করে ঘুরছে এই গ্রহটি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি আমাদের পরিচিত গ্রহগুলোর থেকে বেশ আলাদা। এই গ্রহটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১২০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।
সহজ ভাষায় বললে, আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তা হলো এক আলোকবর্ষ। এই হিসেবে, গ্রহটি আমাদের থেকে বিশাল এক দূরত্বে অবস্থান করছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহটি দুইটি ‘বাদামী বামন নক্ষত্র’কে একটি বিশেষ পথে প্রদক্ষিণ করে। ‘বাদামী বামন নক্ষত্র’ আসলে নক্ষত্র এবং গ্রহের মাঝামাঝি আকারের জ্যোতিষ্ক। এদের নক্ষত্রের মতো আলো বিকিরণ করার ক্ষমতা নেই।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই বামন নক্ষত্রগুলি একে অপরের চারপাশে ঘুরতে থাকে। তাদের গতিবিধির পরিবর্তন লক্ষ্য করে বিজ্ঞানীরা এই গ্রহটির অস্তিত্বের আভাস পেয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহটি যে পথে ঘুরছে, তা খুবই অস্বাভাবিক। এটি অনেকটা লম্বভাবে বা ৯০ ডিগ্রি কোণে এদের চারপাশে ঘোরে।
এই আবিষ্কারের সাথে সাথে, ‘স্টার ওয়ার্স’ সিনেমার ‘ট্যাটুয়িন’-এর কথা মনে পড়ে যায়, যেখানে দুইটি সূর্যের চারপাশে একটি গ্রহ ঘুরতে দেখা যায়। যদিও এই গ্রহটি সরাসরি দেখা যায়নি, তবে বিজ্ঞানীরা এর অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা চালাচ্ছেন।
বিজ্ঞানীরা এখনো এর ভর এবং কক্ষপথ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। আর্হাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যোতির্পদার্থবিদ, যিনি এই গবেষণার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না, তিনি বলেছেন, “আমি এখনই নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না যে গ্রহটি সত্যিই বিদ্যমান।”
ইউনিভার্সিটি অফ বার্মিংহামের গবেষক, থমাস বেক্রফ্ট বলেছেন, “এই ধরনের গ্রহগুলি কীভাবে গঠিত হয়, তা জানা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলির গঠন সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে এমন গ্রহের ধারণা বহু আগে থেকেই ছিল, কিন্তু বাস্তবে তাদের খুঁজে পাওয়াটা সত্যিই অসাধারণ।” তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস