**তিউনিসিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা: অভিযুক্তদের বিচার পুনরায় শুরু, মৃত্যুদণ্ডের প্রশ্নে অনিশ্চয়তা**
তিউনিসিয়ায় ৪০ জনের বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, কূটনীতিক এবং সাংবাদিকরা।
তাদের অভিযোগ, এই মামলা সাজানো এবং প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদের ক্ষমতা দখলের একটি কৌশল।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের দীর্ঘ কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। যদিও ১৯৯১ সাল থেকে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি, যা কার্যত স্থগিতাদেশের সামিল।
কিন্তু দেশটির আইন এখনো মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখেছে।
আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার নজির রয়েছে, যেমন মোহাম্মদ ব্রাহ্মী হত্যা মামলায় জড়িত আটজনের মৃত্যুদণ্ড হয়। একই বছর, বিরোধী দলীয় নেতা শোকরি বেলাইদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১৬ সালে বেন গুয়ারদানে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত সন্দেহে ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ বহু মানুষ নিহত হয়েছিল। এছাড়া, ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্টের গার্ডের একটি বাসে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত আটজনের মৃত্যুদণ্ড হয়।
এই মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন জাউহার বেন মবারেখ, খায়াম তুর্কি, ইসাম চেবি, গাজি চাওয়াচি, রিদা বেলহাজ এবং আব্দুল হামিদ জেলাসি। তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিবর্তনের চেষ্টা এবং অন্যান্য গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রাক্তন বিচার মন্ত্রী নুরেদ্দিন ভিরি-ও এই মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ নিজেও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
২০১৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তিনি বলেছিলেন, যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যেতে পারে। ২০২০ সালে এক নারীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তিনি তাঁর নিরাপত্তা বাহিনীকে বলেছিলেন, “খুনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত।”
তবে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট সাঈদ এখনো পর্যন্ত কারো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেননি।
এই পরিস্থিতিতে, মামলার রায় এবং তা কার্যকর করা হবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা