ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে স্ন্যাকসের বিল পরিশোধ করতে না পারায় এক ব্রিটিশ মহিলাকে বিমান থেকে নামিয়ে দেয় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে টেনিফ থেকে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলেগামী রায়ানএয়ারের একটি ফ্লাইটে।
জানা গেছে, ওই নারীর কার্ডে পেমেন্ট হচ্ছিল না, তাই তিনি স্ন্যাকসের দাম দিতে পারেননি।
ব্রিটিশ নাগরিক অ্যান-মেরি মারে, যিনি ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন, ২৮শে মার্চ রায়ানএয়ারের একটি ফ্লাইটে করে ফেরার সময় এই ঘটনার শিকার হন।
বিমানের মধ্যে তিনি ৭ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০০০ টাকা, সে সময়ের বিনিময় হার অনুযায়ী) মূল্যের কিছু স্ন্যাকস– যেমন, এক প্যাকেট প্রিংলস, এক বোতল কোক ও এক বোতল জল– অর্ডার করেন।
বিল পরিশোধের জন্য তিনি যখন তাঁর কার্ড পাঞ্চ করেন, তখন সেটি কাজ করেনি।
বিমান কর্মীরা অন্য একটি মেশিন আনেন, কিন্তু তাতেও একই সমস্যা দেখা দেয়।
মারের কাছে নগদ টাকাও ছিল না।
তখন তিনি প্রস্তাব করেন, বিমান বন্দরে নামার পর এটিএম থেকে টাকা তুলে তিনি বিল পরিশোধ করবেন।
কিন্তু বিমানের কর্মীরা তাতে রাজি হননি।
মারে জানান, এরপর তিনি যখন স্ন্যাকসগুলো খাওয়া শুরু করেন, তখন বিমান কর্মীরা তাঁকে বাধা দেন।
রায়ানএয়ার কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রী মারি ক্রু-দের কথা শোনেননি এবং বিল পরিশোধের আগেই খাবারগুলো খেয়ে ফেলেন।
এছাড়া, তাঁর আচরণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল।
তবে মারে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করেননি।
তাঁর মতে, কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কোনো উচ্চ বা তীব্র বাক্য বিনিময় হয়নি।
এরপরেও, ডাবলিন ভিত্তিক বিমান সংস্থাটি ব্রিস্টল বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানায়।
বিমানবন্দরের পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মারেকে বিমান থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে অ্যাভন অ্যান্ড সোমারসেট পুলিশ জানায়, তারা ব্রিস্টল বিমানবন্দরে নামা একটি ফ্লাইটে এক ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যাত্রীর’ খবর পেয়েছিল।
দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তারা বুঝতে পারে, এটি একটি দেওয়ানি বিবাদ সম্পর্কিত বিষয়, তাই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ঘটনার আকস্মিকতায় মারে খুবই বিস্মিত হয়েছিলেন।
তিনি জানান, বিমান কর্মীরা যখন পুলিশের কথা বলেন, তখন তিনি ভেবেছিলেন, এটা একটা রসিকতা।
পুলিশ এসে তাঁকে বিমান থেকে নামতে বলার পরে তিনি হতবাক হয়ে যান।
তাঁর মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য তিনি সব রকম চেষ্টা করেছিলেন।
জানা গেছে, ঘটনার সময় মারে সম্ভবত ভিডিও করছিলেন, যে কারণে বিমানের কর্মীরা তাঁকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন।
মারের ধারণ করা একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ সদস্যরা খুবই শান্ত ও ভদ্রভাবে তাঁর সঙ্গে কথা বলছেন।
এমনকি, তাঁরা তাঁর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কেও জানতে চান।
মারে আরও জানান, ঘটনার পর বিমান কর্মীরা তাঁকে জানান, রায়ানএয়ারে তাঁর এবং তাঁর সঙ্গীর ওড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যদিও তাঁর মতে, এমন ঘটনার পর তিনি আর কখনোই এই বিমান সংস্থার বিমানে ভ্রমণ করতে চাইবেন না।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার