পাকিস্তান থেকে ৮০,০০০ এর বেশি আফগান নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ, এমনটাই জানা গেছে। এপ্রিল মাসের শুরু থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধভাবে বসবাস করা বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, তালাল চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের শেষের দিকে শুরু হওয়া এই পরিকল্পনার সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। তিনি আরও জানান, কোনো অবৈধ বিদেশি নাগরিককে আশ্রয় দিলে, বাড়ির মালিক বা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, এপ্রিল মাস থেকে প্রায় ৬০,০০০ আফগান নাগরিককে পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। সংস্থাটির আফগানিস্তান মিশনের প্রধান মিহিউং পার্ক বলেছেন, “বর্তমানে পাকিস্তান থেকে ব্যাপক হারে মানুষ ফেরত আসায় সীমান্ত এবং প্রত্যাবর্তনের জায়গাগুলোতে জরুরি চাহিদা বাড়ছে।”
আফগানিস্তান সরকার এই পদক্ষেপকে ‘জোরপূর্বক বিতাড়ন’ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করেছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, আফগান শরণার্থীদের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ বাড়ছে। যদিও কাবুল এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গিয়ে তালেবান সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন। বৈঠকে নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
আফগান শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের ফলে উদ্বাস্তু পরিবারগুলো কঠিন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে। অনেক পরিবার বংশ পরম্পরায় পাকিস্তানে বসবাস করে আসছিল।
পেশোয়ারের একটি রেস্টুরেন্টের মালিক আকবর খান জানিয়েছেন, তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছেন। তার পরিবার, সন্তান এবং পরিবারের ১০ জন সদস্য সেখানেই সমাধিস্থ হয়েছেন। তাই তারা পাকিস্তান ছাড়তে চান না।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই বিতাড়ন অভিযানের সমালোচনা করে বলেছে, এর ফলে নারী ও শিশুদের মতো দুর্বল মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাদের দেশে ফিরে নিরাপত্তা সংকট ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
পাকিস্তান সরকার জানাচ্ছে, যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, শুধুমাত্র তাদের বিরুদ্ধেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদের মতে, এটি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত একটি বিষয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা