যুক্তরাষ্ট্রের এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা, যেখানে কোটি টাকার সম্পত্তির লোভে মা ও দাদার হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত নাথান কারম্যান নামের এক ব্যক্তি, বিচার শুরুর আগেই আত্মহত্যা করেন। ২০১৬ সালে সমুদ্রে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন নাথানের মা, লিন্ডা কারম্যান।
এর কয়েক বছর আগে ২০১৩ সালে নাথানের দাদা, জন চাকালোস-কে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এই দুই ঘটনার পরই নাথানের দিকে সন্দেহের আঙুল ওঠে।
এই ঘটনার পেছনের কারণ হিসেবে জানা যায়, প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পারিবারিক একটি ট্রাস্টের (trust) উত্তরাধিকার নিয়ে বিবাদ ছিল। অভিযোগ ওঠে, এই সম্পত্তির লোভে নাথান তার মা ও দাদাকে হত্যা করে।
যদিও নাথান বরাবরই নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন, কিন্তু ২০২৩ সালে কারাগারে তিনি আত্মহত্যা করেন। মায়ের মৃত্যুর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২২ সালে তার বিরুদ্ধে হত্যা ও প্রতারণার মামলা করা হয়েছিল।
এই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে কেইসি শেরম্যানের লেখা “ব্লাড ইন দ্য ওয়াটার: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ আ ফ্যামিলি ট্র্যাজেডি” (Blood in the Water: The Untold Story of a Family Tragedy) নামের একটি বই। বইটিতে এই মামলার নতুন কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
লেখক কেইসি শেরম্যানের মতে, এই ঘটনা শেক্সপিয়ারের (Shakespeare) কোনো ট্র্যাজেডির থেকে কম কিছু নয়। বইটিতে নাথানের মা ও দাদার মৃত্যুরহস্যের বিভিন্ন দিক উন্মোচন করা হয়েছে।
বইটির লেখক জানান, নাথান তার মা ও দাদাকে ভালোবাসতেন। কিন্তু তাদের হত্যার অভিযোগ ওঠে, যা ছিল প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলারের পারিবারিক সম্পত্তি পাওয়ার একটি চেষ্টা।
ঘটনার তদন্তে জানা যায়, নাথানের কাকিমারা (aunts) শুরু থেকেই নাথানকে সন্দেহ করতেন। তাদের মতে, জন চাকালোস নাথানকে বেশি ভালোবাসতেন এবং সম্পত্তিও সম্ভবত তাকেই দিতে চেয়েছিলেন, যা অন্যদের ঈর্ষার কারণ ছিল।
বইটিতে জন চাকালোসের দীর্ঘদিনের তত্ত্বাবধায়ক জয়েস ওয়াশবার্নের একটি সাক্ষাৎকার রয়েছে। ওয়াশবার্ন জানান, ২০১৩ সালে পরিবারের একজন সদস্য তাকে জন চাকালোসকে হত্যার জন্য রাজি করাতে চেয়েছিল এবং এর জন্য ১০ হাজার ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।
তবে ওয়াশবার্ন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এর দুই সপ্তাহ পরেই জন চাকালোস নিহত হন।
এছাড়াও, নাথানের আইনজীবীর কাছ থেকে পাওয়া একটি টেক্সট মেসেজের (text message) কথাও বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে লিন্ডা কারম্যান তার বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন।
তবে এই হুমকিকে কেউ গুরুত্ব দেয়নি।
এই মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। লেখক কেইসি শেরম্যানের মতে, এই রহস্য সহজে সমাধান হওয়ার নয়।
তথ্যসূত্র: পিপলস (People)