নববিবাহিতা এক তরুণী তার শ্বশুরমশাইয়ের আচরণে অস্বস্তি বোধ করছেন। তিনি মনে করছেন, তার শ্বশুরমশাইয়ের মনে হয়তো তার প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। সম্প্রতি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এই নারীর এই উদ্বেগের কারণ তিনি তার স্বামীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে দ্বিধা বোধ করছেন। কারণ, তিনি চান না তার স্বামীর সঙ্গে পিতার সম্পর্কে কোনো ফাটল ধরুক।
ঘটনার সূত্রপাত হয় কয়েক সপ্তাহ আগে, যখন ওই তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই তিনি তার শ্বশুরমশাইয়ের কিছু আচরণে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, প্রথমে তিনি বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। হয়তো নতুন সম্পর্ক, শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ—এসব কারণে নার্ভাসনেস থেকে এমনটা হচ্ছে ভেবেছিলেন।
কিন্তু ধীরে ধীরে তার মনে হতে থাকে, শ্বশুরমশাইয়ের তাকানোর ধরন স্বাভাবিক নয়।
ওই তরুণী জানান, তার শ্বশুরমশাই তাকে কিছু ‘আজব’ কথা বলেন। যেমন, একদিন তিনি একটি সাধারণ পোশাক পরেছিলেন। তখন তার শ্বশুর বলেছিলেন, ‘ওই রঙটা তোমাকে দারুণ দেখাচ্ছে…তবে একটু অন্যরকম ভাবে’। তরুণী বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দিলেও, তার মনে হয়েছিল, এর মধ্যে গভীর কোনো অর্থ লুকানো আছে।
এরপর তিনি লক্ষ্য করেন, যখন আশেপাশে কেউ থাকে না, তখন তার শ্বশুর তার খুব কাছে এসে দাঁড়ান। এমনকি ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ও তিনি নাকি অনুভব করেছেন, শ্বশুরমশাই তার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। একবার তো তিনি আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখেন, তার শ্বশুর তাকে অনুসরণ করছেন।
ঘটনাগুলো তাকে বেশ চিন্তায় ফেলে দেয়। তিনি শুরুতে ভেবেছিলেন, হয়তো তিনি ভুল ভাবছেন। কিন্তু একদিন রাতে, তার তেষ্টা পাওয়ায় তিনি পানি পান করতে ঘর থেকে বের হন। তখন তিনি দেখেন, তার শ্বশুর বারান্দায় চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন। তাকে দেখে শ্বশুরমশাই মুচকি হেসে জানতে চান, ‘ঘুম হয়নি বুঝি?’
ওই নারীর মতে, তার শ্বশুরের গলার স্বর শুনে তার গা-টা শিউরে উঠেছিল।
তবে স্বামীকে তিনি এখনো পর্যন্ত কিছুই জানাননি। কারণ, তার স্বামী তার বাবাকে খুব ভালোবাসেন। তিনি চান না, কোনো ভুল বোঝাবুঝির কারণে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটুক। কিন্তু তরুণী জানান, শ্বশুরমশাইয়ের সঙ্গে একা থাকলেই তিনি একটা অস্বস্তি অনুভব করেন।
তার মনে হয়, সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। তিনি নিজেকে নিরাপদ মনে করেন না। আর সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, তিনি মনে করেন, এটা হয়তো সবে শুরু।
বিষয়টি নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরামর্শ চেয়েছেন। সেখানে অনেকে তাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, যেহেতু তার মনে খারাপ লাগা তৈরি হয়েছে, তাই এই অনুভূতিকে অগ্রাহ্য করা উচিত হবে না।
কারো কারো পরামর্শ, স্বামীকে সব জানানো উচিত। যদি স্বামী তার বাবার পক্ষ নেন, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং বাংলাদেশি পারিবারিক কাঠামোর প্রেক্ষাপটে এর গুরুত্ব অনেক। আমাদের সমাজে শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে একজন নারীর দ্বিধাগ্রস্ত হওয়াটা স্বাভাবিক।
তথ্য সূত্র: পিপল