হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে এক মাংসাশী শুঁয়োপোকা আবিষ্কার করা হয়েছে, যা শিকারের দেহাবশেষ দিয়ে তৈরি করে সুরক্ষা কবচ। এই বিরল প্রজাতির পোকাটিকে “হাড় সংগ্রহকারী” নাম দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, বিজ্ঞান বিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
ওহাও দ্বীপপুঞ্জে পাওয়া যাওয়া এই অদ্ভুত শুঁয়োপোকাটি মাকড়সার জালে আটকা পড়া পোকামাকড় শিকার করে।
এরপর তারা তাদের রেশমের খোলসটিকে শিকারের দেহের অংশ, যেমন— পিঁপড়ের মাথা এবং মাছির ডানা দিয়ে সজ্জিত করে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই আচ্ছাদনটি সম্ভবত তাদের আত্মগোপনে সাহায্য করে। এর ফলে শিকারীরা মাকড়সার নজরে না এসেই শিকার করতে পারে।
গবেষক ড্যান রুবিনফ, যিনি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোয়া-তে কর্মরত আছেন, এই আবিষ্কার সম্পর্কে বলেন, “অন্যান্য মাংসাশী শুঁয়োপোকা অনেক অদ্ভুত কাজ করে, তবে এটি সত্যিই অসাধারণ।
হাওয়াই দ্বীপে বসবাসকারী আরও কিছু শুঁয়োপোকা তাদের প্রতিরক্ষামূলক আবরণ তৈরি করতে রেশম গ্রন্থি ব্যবহার করে, যেখানে তারা শ্যাওলা, বালি এবং অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে।
কিন্তু এই শুঁয়োপোকাটি প্রথম, যারা তাদের খোলস তৈরিতে পোকামাকড়দের অংশ ব্যবহার করে।
হাওয়াইয়ের কীটতত্ত্ববিদ স্টিভেন মন্টগোমারি, যিনি এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তিনি বলেন, “এটি সত্যিই এক অসাধারণ ধরণের আবরণ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই “হাড় সংগ্রহকারী” শুঁয়োপোকা কমপক্ষে ৬০ লক্ষ বছর পুরোনো।
যা হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের থেকেও প্রাচীন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, গত ২০ বছরে মাত্র ৬২টি এমন শুঁয়োপোকার সন্ধান পাওয়া গেছে।
মাংসাশী শুঁয়োপোকা খুবই বিরল এবং হাওয়াইয়ে পাওয়া এই “হাড় সংগ্রহকারী” প্রজাতি নিজেদের মধ্যেও খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
রুবিনফ আরও জানান, “আমাদের সংরক্ষণে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।”
কারণ বর্তমানে এই অঞ্চলে বিভিন্ন আগ্রাসী প্রজাতি বেড়ে যাওয়ায় তাদের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই গবেষণাটি জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে এবং আমাদের দেশের পরিবেশ ও বন্যজীবন সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ায়।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশেও বিভিন্ন ধরণের পোকামাকড় এবং অন্যান্য প্রাণী রয়েছে, যাদের সংরক্ষণের জন্য আমাদের আরও যত্নবান হওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।