ভাগ্যবান একজন ব্যক্তি, যিনি ত্রিশের কোঠায় পৌঁছে নিজের বাড়ি এবং জমির মালিক হয়েছেন। চারপাশে যখন বন্ধুদের আর্থিক কষ্টের কথা শোনেন, তখন তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চান।
কিন্তু কিভাবে সাহায্য করলে তা বন্ধুদের কাছে সম্মানজনক হবে, সেই চিন্তাই তাকে অস্থির করে তোলে। বন্ধুদের জন্য বিনা ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা করা কিংবা তাদের জমির ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও, তিনি অনুভব করেন যে তার প্রচেষ্টা খুব একটা কাজে আসছে না।
এই সমস্যা সমাধানে মনোবিদ ক্রিস মিলস-এর পরামর্শ নেওয়া হয়। মিলস মনে করেন, বন্ধুদের হয়তো আর্থিক সাহায্যের চেয়ে নিজেদের চেষ্টায় কিছু করার মধ্যে বেশি তৃপ্তি। তারা সম্ভবত নিজেদের বন্ধুমহলে, একই ধরনের পরিস্থিতিতে থাকা বন্ধুদের মধ্যে একতা খুঁজে পায় এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও কিছু স্বপ্ন থাকে।
এমন অবস্থায় আপনার সাহায্য তাদের কাছে জীবন থেকে পালানোর মতো মনে হতে পারে, সহায়তার মতো নয়।
এই প্রসঙ্গে, মিলস আরও বলেন, বন্ধুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়াটাও অনেক বড় সাহায্য হতে পারে। তাদের কথা মন দিয়ে শুনলে, তাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করা যেতে পারে।
আপনার থেকে পাওয়া সহানুভূতি তাদের জন্য অন্যদের তুলনায় বেশি স্বস্তিদায়ক হতে পারে। কারণ আপনি তাদের সমস্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন। তাই, তাদের দুশ্চিন্তা আপনার উপর বোঝা হিসেবে চাপ সৃষ্টি করবে না।
কখনও কখনও, বন্ধুদের জন্য আপনার বাড়িতে থাকার প্রস্তাব তাদের কাছে কঠিন মনে হতে পারে। কারণ, এতে তাদের উপর আপনার নির্ভরশীল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অথবা, আপনার বাড়িটি তাদের জন্য খুব দূরেও হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে, তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সাহায্য করার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেমন, তাদের বাড়িতে গিয়ে কিছুদিনের জন্য তাদের কাজে সাহায্য করা যেতে পারে। অথবা, তাদের বিশ্রামের জন্য আপনার বাড়িতে কয়েক দিনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, বন্ধুদের আসলে কী ধরনের সাহায্য প্রয়োজন, তা তাদের জিজ্ঞাসা করা। আপনি হয়তো অনেক কিছু দিতে চান, কিন্তু তাদের যদি সেগুলোর প্রয়োজন না থাকে, তাহলে আপনার চেষ্টা তেমন ফল নাও দিতে পারে।
বন্ধুদের প্রয়োজন অনুযায়ী সাহায্য করাই আসল কথা। তাদের আত্মসম্মান বজায় রেখে কীভাবে সাহায্য করা যায়, সেই বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান