পশ্চিম আফ্রিকার কেনিয়ার একটি চার্চে গোপন কবর এবং ‘ধর্মীয় গোঁড়ামি’ চর্চার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করেছে এবং দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
এই ঘটনার পর, কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ অনিবন্ধিত চার্চগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
কেনিয়ার মিগোরি কাউন্টির একটি প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত মেলকিয়ো সেন্ট জোসেফ মিশন্স অফ মেসিয়াহ চার্চ ইন আফ্রিকা-র বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২১শে এপ্রিল পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়।
অভিযানে পুলিশ সদস্যরা বেশ কয়েকজন সদস্যকে উদ্ধার করে এবং দুটি মৃতদেহ খুঁজে পায়। এছাড়াও, চার্চের ভেতরে থাকা কয়েক ডজন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় মৃতদেহগুলির মধ্যে একজন ছিলেন পুলিশের কনস্টেবল দান আয়ো ওবুরা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই চার্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ওবুরার পরিবার জানায়, তিনি অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ছুটিতে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরে তিনি নিখোঁজ হন। পরে তারা জানতে পারেন যে, চার্চে তার মৃত্যু হয়েছে এবং সেখানেই তাকে কবর দেওয়া হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা এখন ওবুরার মৃতদেহ ফেরত পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এই চার্চের সদস্যরা বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতেন। তাদের শিশুরা স্কুলে যেত না এবং অসুস্থ হলে চিকিৎসা করানোরও অনুমতি ছিল না।
চার্চের প্রধান নিজেকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করতেন এবং তার অনুসারীরা তাকে পূজা করত।
এই ঘটনার সঙ্গে ২০১৪ সালে কেনিয়ার শাকাখোলা জঙ্গলে সংঘটিত একটি ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা অনাহারে মারা গিয়েছিল।
অভিযোগ ছিল, তাদের ফুসলিয়ে এই কাজ করানো হয়েছিল। মিগোরির ঘটনাটিও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কেনিয়ার মানবাধিকার কর্মীরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, এই ধরনের ধর্মীয় গোঁড়ামি সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং মানুষকে অন্ধবিশ্বাসের দিকে ঠেলে দেয়।
তারা আরও জানান, সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
কেনিয়ার সরকার ইতিমধ্যেই অনিবন্ধিত চার্চগুলির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষের মতে, ধর্মীয় স্বাধীনতার নামে কোনো ধরনের অপকর্ম বরদাস্ত করা হবে না।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা