উত্তর স্পেনের এক মনোরম গ্রামে, যেখানে আটলান্টিক মহাসাগরের ঢেউ আছড়ে পরে, সেখানে একটি পুরনো বাতিঘরের গল্প শোনানো যাক।
এখানকার নীল জলরাশি আর সবুজ পাহাড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে ফ্যারো দে কুডিল্যেরো নামের বাতিঘরটি।
১৮৫৮ সালে তৈরি হওয়া এই বাতিঘর এখন আর শুধু নাবিকদের পথ দেখায় না, এটি পর্যটকদের কাছেও এক বিশেষ আকর্ষণ।
সম্প্রতি, এই বাতিঘরের পুরনো ঘরটিকে সংস্কার করে তৈরি করা হয়েছে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট।
জার্মানির ‘ফ্লোটেল’ নামক একটি কোম্পানি এই বাতিঘরটিকে নতুন করে সাজিয়েছে।
বাতিঘরের পুরনো ঘরটিকে তারা দুটি অত্যাধুনিক অ্যাপার্টমেন্টে পরিণত করেছে, যা ছুটির দিন কাটানোর জন্য আদর্শ।
অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে রয়েছে আরামদায়ক আসবাবপত্র, আধুনিক সব সুবিধা এবং বাতিঘরের ঐতিহাসিক আবহ।
যারা প্রকৃতির মাঝে, শান্ত পরিবেশে, কিছু দিন কাটাতে চান, তাদের জন্য এই জায়গাটি অসাধারণ।
বাতিঘরের অন্দরসজ্জা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
গরম মেঝে, কাঠের তৈরি স্টোভ, সুসজ্জিত রান্নাঘর এবং বিশাল আকারের একটি বাথটাব—যেন এক স্বপ্নের জগৎ।
জানালায় দাঁড়ালে একদিকে যেমন সমুদ্রের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়, তেমনই আবার পূর্ব ও পশ্চিম দিকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্যও উপভোগ করা যায়।
বাতিঘরের আলো জ্বলার দৃশ্যটিও মুগ্ধ করার মতো।
ঐতিহাসিক এই বাতিঘরের একটি বিশেষত্ব হলো, এখানে আসা পর্যটকদের জন্য বাতিঘরের ইতিহাস নিয়ে একটি ছোটখাটো পাঠাগার তৈরি করা হয়েছে।
সেখানে লাইটহাউস সম্পর্কিত নানান বই, জার্নাল ও আলোকচিত্র রয়েছে।
এছাড়াও, এখানে একটি ‘অনেস্টি বার’ রয়েছে, যেখানে নানান ধরনের পানীয় ও স্ন্যাকস পাওয়া যায়।
কুডিল্যেরো গ্রামটি তার মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের জন্য সুপরিচিত।
গ্রামের সংকীর্ণ পথ, পাহাড়ের গা ঘেঁষে তৈরি বাড়িগুলো এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা—সবকিছুই পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
এখানকার স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে তাজা সি-ফুডের নানারকম পদ পাওয়া যায়, যা ভোজনরসিকদের মন জয় করে।
এছাড়াও, এখানকার ‘ফ্যাবাডা আস্তুরিয়ানা’ নামক একটি বিশেষ স্থানীয় খাবারও বেশ জনপ্রিয়।
এই বাতিঘরে থাকার খরচ সম্পর্কে যদি বলি, তাহলে দুটি মানুষের জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া শুরু হয় প্রায় ১৯,০০০ টাকা থেকে (ভারতীয় মুদ্রায়)।
পুরো বাতিঘরটি একসঙ্গে ভাড়া নিলে, জনপ্রতি খরচ আরও কম হয়।
যদি আপনি উত্তর স্পেনের এই সুন্দর গ্রামে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করেন, তাহলে ফ্যারো দে কুডিল্যেরো বাতিঘর হতে পারে আপনার জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
প্রকৃতির কাছাকাছি, ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে, এই বাতিঘরে কাটানো সময় আপনার স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান