ঐতিহাসিক এক কনভেন্ট, যা এখন নিউ ইয়র্কের হাডসন উপত্যকায় একটি নয় কামরার অত্যাধুনিক হোটেলে রূপান্তরিত হয়েছে। হাডসন নেভিগেটর নামের এই হোটেলটি তার আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং আধুনিক সব সুবিধার জন্য এরই মধ্যে সবার নজর কেড়েছে।
হাডসন নদীর তীরে অবস্থিত এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে মাথায় রেখে হোটেলটি তৈরি করা হয়েছে, যা পর্যটকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের হাডসন শহরে অবস্থিত এই হোটেলটি ম্যানহাটান শহর থেকে প্রায় দুই ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। এক সময়ের পুরনো ভিক্টোরিয়ান যুগের একটি কনভেন্ট, যা বর্তমানে একটি অত্যাধুনিক হোটেলে পরিণত হয়েছে।
১লা মে, হোটেলটি আনুষ্ঠানিকভাবে তার কার্যক্রম শুরু করে। এখানে রয়েছে নয়টি বিশেষ সমুদ্র-বিষয়ক স্যুট, একটি লাইব্রেরি এবং একটি সুন্দর বাগান।
পুরনো দিনের স্থাপত্যশৈলীকে সম্মান জানিয়ে মূল কাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে হোটেলটি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আসল রঙিন কাঁচের জানালা, জটিল কারুকার্য করা কাঠের কাজ এবং বিশাল সিঁড়ি।
হোটেলটির নকশা হাডসনের সমুদ্র বিষয়ক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। হাডসন একসময় তিমি শিকারের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল, যা এখানকার বাণিজ্যে বিশেষ অবদান রেখেছিল।
হোটেলের নকশায় সেই ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এর দেয়ালে বিশাল তিমি মাছের ছবি, কম্পাস ও অ্যাংকারের মোটিফ ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি, তারকা চিহ্নিত কার্পেটিংগুলিও সমুদ্র বিষয়ক দিক নির্দেশনার একটি অংশ।
হোটেলের প্রধান উদ্যোক্তা বেঞ্জামিন রিনজলার জানিয়েছেন, “আমরা চেয়েছিলাম এমন একটি জায়গা তৈরি করতে যা হাডসনের শিকড়কে সম্মান জানাবে এবং একই সাথে আধুনিক ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আরামদায়ক স্থান হবে। এটি আমাদের শহরের ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখার একটি উপায়।”
এখানে আসা অতিথিদের জন্য প্রতিটি কক্ষে রয়েছে আধুনিক সব সুবিধা। ইলেক্ট্রিক ফায়ারপ্লেস, আরামদায়ক বাথটাব এবং গরম মেঝে সহ এই নয়টি কক্ষে উন্নতমানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
একটি স্যুট বাদে প্রতিটি কক্ষে দুইজন মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। স্যুট ১-এ একটি কুইন সোফা পুলআউট রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে চারজন থাকতে পারে।
হোটেলের পাশেই রয়েছে একটি সাদা বেড়া দিয়ে ঘেরা বাগান। এছাড়া, এখানকার অতিথিরা একই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ‘দি হাডসন হোয়েলার’ নামক হোটেলে অবস্থিত জিম এবং লবিতে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
হাডসনের আকর্ষণীয় ওয়ারেন স্ট্রিটের গ্যালারি, বুটিক ও ক্যাফে থেকে হেঁটে ১০ মিনিটের পথ পেরোলেই এই হোটেলের দেখা পাওয়া যায়।
এখানে আগত পর্যটকেরা হাডসন শহরের বিখ্যাত অ্যান্টিক শপগুলোতে ঘুরতে যেতে পারেন, অথবা স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতে মুখরোচক খাবার উপভোগ করতে পারেন।
এছাড়াও, রাজ্যের সবচেয়ে পুরনো থিয়েটার হল, হাডসন হলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন।
বেঞ্জামিন রিনজলার আরও বলেন, “আমরা আমাদের হোটেলগুলোকে শুধু কয়েকটি সাধারণ হোটেল হিসেবে দেখি না, বরং হাডসনের সমৃদ্ধ সমুদ্র বিষয়ক পরিচয় তুলে ধরার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখি। দ্য হাডসন নেভিগেটর-এর মাধ্যমে, আমরা সেই ঐতিহ্যকে আরও গভীর করে তুলছি।”
হাডসন নেভিগেটর-এ থাকার খরচ সপ্তাহের দিনগুলোতে শুরু হয় প্রায় ১৬৯ মার্কিন ডলার থেকে (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮,৫০০ টাকার মতো) এবং ছুটির দিনগুলোতে তা বেড়ে হয় প্রায় ৩৪৯ মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যা প্রায় ৩৮,০০০ টাকার মতো)।
আগ্রহীরা এই হোটেলের ওয়েবসাইট hudsonnavigator.com-এ গিয়ে বুকিং করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল + লেজার