শিরোনাম: বনি রাইট: সঙ্গীতের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং মানবতার প্রতিচ্ছবি
সঙ্গীতের জগতে বনি রাইট একটি সুপরিচিত নাম। তাঁর কণ্ঠের জাদু এবং গানের গভীরতা আজও অগণিত মানুষের হৃদয়ে দোলা দেয়। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ার, সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা, এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা তুলে ধরেছেন।
বনি রাইটের সঙ্গীত জীবন শুরু হয় অপ্রত্যাশিতভাবে। কলেজে সমাজকর্ম নিয়ে পড়াশোনা করলেও, গান ছিল তাঁর শখের বিষয়। বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় তিনি ব্লুজ শিল্পীদের সঙ্গে গান গাইতে শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর গান শ্রোতাদের মন জয় করে এবং তিনি পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর কথায়, “তখন বুঝিনি, ব্লুজ গিটার বাজানো এবং গান গাওয়ার ক্ষেত্রে নারী শিল্পীর সংখ্যা খুবই কম ছিল। তাই হয়তো দ্রুত সুযোগ এসেছিলো।”
বনি রাইটের সঙ্গীত জীবনের ওপর তাঁর বাবার (ব্রডওয়ের তারকা জন রাইট) প্রভাব ছিল গভীর। বাবার মঞ্চের প্রতি ভালোবাসা, ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং প্রতিটি অনুষ্ঠানে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার বিষয়টি তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে। বনি রাইট বলেন, “বাবা সবসময় বলতেন, আমরা যেন আমাদের কাজকে ভালোবাসি এবং মানুষের কাছে পৌঁছে দিই।”
গিটার বাজানো নিয়ে বনি রাইটের নিজস্ব একটি স্টাইল তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, “আমি ছোটবেলায় অন্যদের গিটার বাজানো দেখে শিখেছি। রেডিও এবং রেকর্ড শুনে শুনে বাজানো রপ্ত করেছি। পরে আমি স্লাইড গিটারের প্রেমে পড়ি। একটি ভালো কম্প্রেসার (pedal) ব্যবহার করে আমি আমার শব্দকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে শিখেছি।”
জন লি হুকারের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল গভীর। তাঁদের একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আজও স্মরণীয়। বনি রাইট বলেন, “জন লি হুকারের সঙ্গে ‘আই’ম ইন দ্য মুড’ গানটি করার সময় আমাদের মধ্যে এক দারুণ বোঝাপড়া তৈরি হয়। আমরা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম, এবং তাঁর সঙ্গে কাজ করাটা আমার জন্য সম্মানের ছিল।”
বনি রাইটের জনপ্রিয় গান ‘আই কান্ট মেক ইউ লাভ মি’। এই গানটি বিচ্ছেদের গভীর বেদনাকে তুলে ধরে। তিনি বলেন, “এই গানটি আমাকে অনেক মানুষের কাছে পরিচিত করেছে। আমি নিজেও এই ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি। তাই আমি বুঝি এই গানের মর্ম।”
সমাজকর্মী হিসেবেও বনি রাইটের পরিচিতি রয়েছে। কোয়েকার মতাদর্শে বেড়ে ওঠা বনি রাইট সবসময় সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি সবসময় চেষ্টা করি, আমার কাজের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনতে।”
তাঁর গানের অনুপ্রেরণা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বনি রাইট বব ডিলান, জন প্রাইন, এবং অন্যান্য কিংবদন্তি শিল্পীদের কথা উল্লেখ করেন। তিনি নতুন প্রজন্মের শিল্পী যেমন লোলা ইয়ং, জেসন ইসবেল, এবং বিয়ন্সে-এর কাজের প্রশংসা করেন।
বনি রাইট এখনও সঙ্গীত জগতে সক্রিয় এবং তাঁর গান আজও মানুষের হৃদয়ে আলোড়ন তোলে। তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে মানবতার জয়গান গেয়েছেন, যা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তাঁর মতে, “যদি গান গাইতে ভালো না লাগে, তাহলে আমি গান গাওয়া ছেড়ে দেবো। কারণ আমি জানি, গানের মাধ্যমে আমি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি।”
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান