বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী রে ড্যালিয়ো সতর্ক করেছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে ইতিমধ্যেই অর্থনীতির ক্ষতি হয়ে গেছে, যা কাটিয়ে ওঠা কঠিন। তাঁর মতে, এর ফলস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্ব অর্থনীতির কাঠামো ভেঙে যাওয়ার পথে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে ড্যালিয়ো লিখেছেন, তাঁর বিভিন্ন সূচকের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে, বিদ্যমান আর্থিক ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক— সবকিছুই ভেঙে যেতে চলেছে, যার মূল কারণ হলো দুর্বল ও টেকসই নয় এমন অর্থনৈতিক ভিত্তি।
ড্যালিয়ো বিশ্বের বৃহত্তম হেজ ফান্ড ব্রিজওয়াটার অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট সম্পর্কে সঠিক পূর্বাভাস দিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেন। সম্প্রতি তিনি তাঁর নতুন বই প্রকাশের প্রচারের অংশ হিসেবে এই মন্তব্য করেন।
ড্যালিয়োর মতে, অনেক ব্যবসায়ী এবং রফতানিকারক মনে করছেন, শুল্ক যাই হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাঁদের নির্ভরশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করতে হবে। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র যে বিশ্বের বৃহত্তম উৎপাদক এবং ঋণ সম্পদের প্রধান ভোক্তা, সেটি টেকসই নয়।
বর্তমানে বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী নেতা এবং সরকারগুলো ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে চাইছে। বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ডলার-ভিত্তিক সম্পদ এবং ইউএস ট্রেজারি থেকে দূরে সরে আসছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খুব দ্রুত না হলেও এমন একটা সময় আসতে পারে, যখন মার্কিন ডলার বিশ্ব রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে তার স্থান হারাবে। ড্যালিয়ো সতর্ক করে বলেছেন, বিনিয়োগকারীদের ধারণা করা উচিত হবে না যে, তাঁরা ক্রমাগত আমেরিকাকে ঋণ দিতে পারবেন এবং বিনিময়ে কঠিন ডলারে পরিশোধ পাবেন।
তিনি আরও লিখেছেন, এমন একটা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন দেশ তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করবে এবং নতুন অর্থনৈতিক জোট গড়বে।
ড্যালিয়ো একাই নন, আরও অনেক শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন জেপি মর্গান চেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেমি ডিমন, ডুকেন ফ্যামিলি অফিসের প্রতিষ্ঠাতা স্ট্যানলি ড্রুকেনমিলার, এবং হেজ ফান্ড বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যানের মতো ব্যক্তিরা। তাঁদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ আমেরিকার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন