মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলো একটি জেনেটিক টেস্টিং কোম্পানির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষার দাবিতে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কোম্পানিটি হলো 23andMe, যারা সরাসরি গ্রাহকদের কাছে ডিএনএ পরীক্ষার কিট বিক্রি করে।
সম্প্রতি দেউলিয়া হওয়ার পর তাদের গ্রাহকদের সংগৃহীত ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো করা হয়েছে।
জানা গেছে, নিউ ইয়র্ক সহ আরও প্রায় দুই ডজনের বেশি রাজ্য এই মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। রাজ্যগুলোর অ্যাটর্নি জেনারেলদের অভিযোগ, গ্রাহকদের সম্মতি ছাড়া তাদের জেনেটিক ডেটা বিক্রি করা যাবে না।
এই ধরনের তথ্য বিক্রি গ্রাহকদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের শামিল। পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান এবং ফ্লোরিডার মতো ২৭টি রাজ্য ও কলম্বিয়া জেলা এই মামলাটি করেছে।
কোম্পানি সূত্রে খবর, 23andMe গত মার্চ মাসে দেউলিয়া হওয়ার জন্য আবেদন করে। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে, গ্রাহক চাহিদা কমে যাওয়া এবং ২০২৩ সালে ডেটা ফাঁসের ঘটনা।
এই ডেটা ফাঁসের কারণে বহু গ্রাহকের জেনেটিক ও অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ হয়ে যায়। বর্তমানে কোম্পানিটি তাদের ব্যবসা নিলামে বিক্রি করার চেষ্টা করছে।
এই নিলামে প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি ডিএনএ প্রোফাইল বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে।
নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস বলেছেন, “23andMe তাদের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে ব্যবসা করতে পারে না। নিউ ইয়র্কের নাগরিক সহ সারা দেশের মানুষ তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা চেয়েছিল এবং তাদের জানার অধিকার আছে যে তাদের তথ্যের কী হবে।”
অন্যদিকে, 23andMe এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাজ্যগুলোর এই দাবি ভিত্তিহীন। তাদের প্রাইভেসি নীতি ও বিদ্যমান আইনের অধীনে এই বিক্রি সম্ভব।
কোম্পানি আরও জানায়, বিজয়ী দরদাতার হাতেও গ্রাহকদের একই অধিকার ও সুরক্ষা বজায় থাকবে।
ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরও এই প্রস্তাবিত সম্পদ বিক্রির বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এটি ক্যালিফোর্নিয়ার সংবেদনশীল জেনেটিক উপাদান হস্তান্তরের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করবে।
বর্তমানে 23andMe তাদের প্রতিষ্ঠাতা অ্যান ওয়োজসিকির কাছ থেকে প্রায় $305 মিলিয়ন ডলারের একটি প্রস্তাব পাওয়ার পর তাদের সম্পদ বিক্রির জন্য পুনরায় দরপত্র খোলার কথা ভাবছে।
এর আগে, তারা Regeneron Pharmaceuticals নামক একটি কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় $256 মিলিয়ন ডলারের একটি প্রস্তাব পেয়েছিল।
এই ঘটনার মাধ্যমে ডেটা নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার গুরুত্ব আরও একবার সামনে চলে এসেছে। তথ্যপ্রযুক্তি এবং ডেটা নির্ভর পরিষেবাগুলোর প্রসারের সাথে সাথে ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন