কর্মব্যস্ত জীবনে শরীরচর্চা করার সময় নেই? কিভাবে সময় বের করবেন, জেনে নিন!
আজকাল কর্মব্যস্ত জীবনযাত্রায় শরীরচর্চার জন্য সময় বের করা অনেকের কাছেই কঠিন একটা চ্যালেঞ্জ। কাজের চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব – সব মিলিয়ে যেন দম ফেলারও ফুরসত নেই। কিন্তু সুস্থ থাকতে হলে শরীরচর্চার বিকল্প নেই। কিভাবে এই ব্যস্ততার মধ্যেও শরীরচর্চাকে জীবনের অংশ করে তুলবেন, সেই বিষয়ে কিছু পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরচর্চা মানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটানো নয়। বরং দিনের বিভিন্ন সময়ে ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমেও শরীরকে সক্রিয় রাখা সম্ভব। যেমন, অফিসের মিটিংগুলো বসে না করে হেঁটে বা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে। এতে একদিকে যেমন ক্যালোরি খরচ হবে, তেমনই মিটিংও হবে সংক্ষিপ্ত এবং ফলপ্রসূ।
কাজের ফাঁকে অল্প সময়ের জন্য কিছু স্ট্রেচিং বা হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। চেয়ার থেকে উঠে কয়েকবার বসার ভঙ্গি করা, অথবা হাতের কিছু সাধারণ ব্যায়াম করাও শরীরের জন্য উপকারী।
একজন পরামর্শদাতা, চার্লস স্কট, যিনি বিভিন্ন পেশাজীবীকে শরীরচর্চা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সাহায্য করেন, তার মতে, কর্মব্যস্ত মানুষেরা প্রায়ই পেশাগত সাফল্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে নিজেদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা করেন। তিনি শরীরচর্চাকে শুধুমাত্র জিম বা ভারী ওয়ার্কআউটের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।
আপনার অফিসের ফ্লাইট যদি দেরিতে ছাড়ে, তাহলে বিমানবন্দরের আশেপাশে হেঁটে সময় কাটানো যেতে পারে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই কিছুক্ষণের জন্য হাঁটা বা দৌড়ানো, অথবা সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে কিছু হালকা ব্যায়াম করা – এই ধরনের অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে।
বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সাথে দলবদ্ধভাবে শরীরচর্চা করলে এটি আরও উপভোগ্য হয় এবং নিয়মিত করার উৎসাহ পাওয়া যায়। নিজেকে ‘একজন ক্রীড়াবিদ’ হিসেবে ভাবা এবং সেই অনুযায়ী জীবনযাত্রা তৈরি করাও এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
ভারমন্ট ক্রিমের জেনারেল ম্যানেজার হ্যারিসন কান, যিনি তার কাজের পাশাপাশি শরীরচর্চাকে গুরুত্ব দেন, তিনি প্রতিদিন ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠে দৌড়ানো বা বাইকিং করেন। তার মতে, দিনের শুরুতেই শরীরচর্চা সেরে নিলে সারাদিন কাজের জন্য একটা আলাদা উদ্যম পাওয়া যায়।
শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর রাখা জরুরি। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
সুতরাং, ব্যস্ততার অজুহাত না দিয়ে, জীবনযাত্রায় ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে শরীরচর্চাকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। নিয়মিত শরীরচর্চা একদিকে যেমন শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে, তেমনই মানসিক চাপ কমাতে এবং কর্মদক্ষতা বাড়াতেও সহায়ক।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস