গাজায় দুর্ভিক্ষের চরম হুঁশিয়ারি, পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে: বিশ্লেষণ
গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে, সেখানকার প্রায় ২১ লক্ষ মানুষের জীবন চরম হুমকির মুখে। খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশন’ (আইপিসি)-এর এক প্রতিবেদনে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধ এবং মানবিক ত্রাণ সরবরাহে নিষেধাজ্ঞার কারণে সেখানকার প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ অনাহারের শিকার হতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় খাদ্য, জল, ওষুধ এবং জীবন রক্ষাকারী অন্যান্য জরুরি সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
গত প্রায় দেড় বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে সেখানকার বাসিন্দারা চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে। বর্তমানে গাজার প্রায় ৯৩ শতাংশ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে।
যদি অবরোধ অব্যাহত থাকে, তাহলে সেখানকার সবাই খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত কয়েক মাসে গাজায় খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। সেখানকার দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিস-এ গত ফেব্রুয়ারী মাস থেকে গমের আটার দাম প্রায় ৩,০০০ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়া, অপুষ্টির শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে, বিশেষ করে গাজার উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলে, যেখানে ধ্বংসযজ্ঞ ব্যাপক।
সংস্থাটি অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করা, নির্বিঘ্নে মানবিক সাহায্য সরবরাহ করা এবং বেসামরিক নাগরিক ও ত্রাণকর্মীদের সুরক্ষার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে হামাস-এর আক্রমণের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৫২,৮৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ১,১৯,৬৪৮ জন আহত হয়েছে।
ওই হামলায় প্রায় ১,১৩৯ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে গাজায় বন্দী করা হয়েছে।
গাজার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য, জল, আশ্রয় এবং চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব দেখা দিলে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তঃ-প্রাদেশিক স্থানচ্যুতি আরও বাড়বে।
এর ফলে অবশিষ্ট সীমিত সম্পদ নিয়ে চরম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে, যা সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা