বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিরতার মধ্যে কানাডায় আসন্ন জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে বাণিজ্য আলোচনার দিকেই সকলের মনোযোগ থাকবে। বিশ্ব নেতারা যখন একত্রিত হবেন, তখন তাদের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে বাণিজ্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তন বা নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগের চেয়েও এক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে বাণিজ্য চুক্তিগুলো।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং সময়সীমা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি।
এই সময়সীমার মধ্যে চুক্তি না হলে, শুল্ক বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ নিতে পারেন তিনি, যা দেশগুলোর অর্থনীতিকে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলবে।
যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে এরই মধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গত এপ্রিল মাসে দেশটির অর্থনীতিতে মন্দা দেখা গেছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক সতর্ক করে জানিয়েছে, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে ১৯৬০ দশকের পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল হতে পারে।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জি-৭ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর নেতারা এই শুল্ক বৃদ্ধির চাপ এড়াতে চাইবেন। তবে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা এখনো অনিশ্চিত।
বিশেষ করে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ইইউ-এর ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জি-৭ সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
তবে, এই মুহূর্তে কোনো বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য কিছু প্রভাব থাকতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনগুলো আমাদের রপ্তানি এবং আমদানি বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও বাংলাদেশ সরাসরি জি-৭ এর সদস্য নয়, তবে বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাগুলো আমাদের অর্থনীতির ওপর একটি পরোক্ষ প্রভাব ফেলবে।
বাণিজ্য নীতি পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে পণ্যের চাহিদা এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসতে পারে, যা বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই অনিশ্চয়তার সময় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং নতুন বাণিজ্য সুযোগগুলো খুঁজে বের করতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন