সত্তর বছর আগে, উত্তর ইয়র্কশায়ারের পাথুরে পাহাড়ি পথে একটি চ্যালেঞ্জের সূচনা হয়েছিল। ৪২ মাইল, অর্থাৎ প্রায় ৬৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া, যা এখন ‘লাইক ওয়াক’ নামে পরিচিত। ব্রিটেনের এই দীর্ঘ পথ হাঁটার চ্যালেঞ্জটি আজও একইভাবে মানুষকে আকর্ষণ করে।
সম্প্রতি, এই হাঁটা পথের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে, মূল চ্যালেঞ্জটির স্মৃতিচারণা করা হয়েছে।
১৯৫৫ সালের অক্টোবরে, বিল কাউলি নামের এক ব্যক্তি ইয়র্কশায়ারের পার্বত্য অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই পথ পাড়ি দেওয়ার ঘোষণা দেন। যারা সফল হবে, তাদের জন্য তিনি একটি কাপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। সেই শুরু।
এরপর বহু বছর ধরে এই পথ হাঁটা একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
এই বছর, ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে, পুরনো দিনের স্মৃতিচারণা করতে একদল মানুষ একত্রিত হয়েছিল। এদের মধ্যে ছিলেন মালকম ওয়াকার, যিনি ১৯৫৫ সালের প্রথম দলে ছিলেন। তাঁর ছেলে এবং নাতি-নাতনিসহ পরিবারের আরও অনেকে এই হাঁটা পথে অংশ নেন।
তাঁদের সঙ্গে ছিলেন লেখকও, যিনি নিজেও এর আগে এই পথ হেঁটেছেন।
যাত্রাটি শুরু হয়েছিল ভোর রাতের অন্ধকারে। উত্তর ইয়র্ক মুরের পাথুরে পথ ধরে তাঁরা এগিয়ে চলেন। কঠিন পথ, প্রতিকূল আবহাওয়া—বৃষ্টি, ঠান্ডা বাতাস—সবকিছুকে সঙ্গী করে তাঁরা এগিয়ে যান।
তাঁদের গন্তব্য ছিল সমুদ্রের কাছাকাছি অবস্থিত রেভেনস্কার। পথে ছিল উঁচু-নিচু পথ, যা তাঁদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছিল।
মালকম ওয়াকার, যিনি ৮৯ বছর বয়সেও এই হাঁটা পথে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গল্প করতে করতে পথ চলছিলেন। হাঁটার শেষে যখন সবাই রেভেন হল হোটেলে মিলিত হন, তখন মালকম বলেন, এই পথ হাঁটা একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা, যা পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে আসার সুযোগ করে দিয়েছে।
কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার পর, সবাই যখন সাফল্যের হাসি হাসছিলেন, তখন সূর্যের আলো ধীরে ধীরে সমুদ্রের বুকে ডুবতে শুরু করে। ইয়র্কশায়ারের এই পথ, একদিকে যেমন প্রকৃতির রুক্ষতা, তেমনই মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রতীক।
এই গল্প শুধু একটি হাঁটা পথের কাহিনি নয়, বরং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টিকে থাকা একটি পরিবারের বন্ধন এবং আত্ম-অনুসন্ধানের গল্প।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান