যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমার ইঙ্গিত, তবে শুল্কের প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা। গত এপ্রিল মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমেছে, যদিও কিছু পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, টানা তিন মাস ধরে মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে। তবে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে এই ধারা পাল্টে যেতে পারে।
এপ্রিল মাসে, গত এক বছরের তুলনায় ভোক্তা মূল্যবৃদ্ধি ২.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মার্চ মাসে এই হার ছিল ২.৪ শতাংশ।
মাসিক ভিত্তিতে দেখলে, মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ০.২ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের দামও কিছুটা কমেছে, যা পরিবারের জন্য স্বস্তিদায়ক হতে পারে।
বিশেষ করে ডিমের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
তবে, অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, শুল্কের প্রভাব এখনো পুরোপুরি দেখা যায়নি। এপ্রিল মাসের শুরুতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, যার প্রভাব বাজারে আসতে কয়েক মাস সময় লাগবে।
তাছাড়া, অনেক কোম্পানি আগে থেকেই পণ্য মজুত করে রেখেছিল, যাতে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে দাম বাড়াতে দেরি করা যায়। পোশাকের দামও সামান্য কমেছে, কারণ এই খাতে আমদানি করা পণ্যের পরিমাণ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কের কারণে কিছু পণ্যের দাম এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ, কম্পিউটার এবং খেলনার দাম বেড়েছে।
চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্কের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শুল্কের প্রভাব এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। মে, জুন এবং জুলাই মাসে এর আরও অনেক প্রভাব দেখা যাবে।
এই পরিস্থিতিতে, ফেডারেল রিজার্ভের জন্য নীতি নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। একদিকে, শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, অন্যদিকে, এর ফলে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সুদহার বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের কারণে অনেক কোম্পানি তাদের পণ্যের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। খেলনা প্রস্তুতকারক ম্যাটেল ইনকর্পোরেটেড-এর মতো কোম্পানিগুলো দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও খারাপ প্রভাব পড়বে। যদিও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি কিছুটা সাহায্য করবে, তবে সামগ্রিকভাবে মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, ‘ইয়েল বাজেট ল্যাব’-এর অনুমান অনুযায়ী, এই শুল্কের কারণে পণ্যের দাম ১.৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং প্রতিটি পরিবারের প্রায় ২,৮০০ ডলার অতিরিক্ত খরচ হতে পারে (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, যা প্রায় ৩ লক্ষ টাকার সমান)।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়লে, তা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষ করে, আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস