মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঋণ: ক্রেডিট কার্ডের দেনা কমলেও, বাড়ছে ছাত্রঋণের বোঝা।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবারগুলোর আর্থিক অবস্থার একটি চিত্র পাওয়া গেছে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্কের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে (Quarterly Report on Household Debt and Credit) দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (Q1 2025) দেশটির মানুষের মোট ঋণের পরিমাণ সামান্য বেড়েছে, যদিও কিছু ক্ষেত্রে স্বস্তিও মিলেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে পরিবারের মোট ঋণের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি ডলার, যা শতকরা হিসাবে ০.৯ শতাংশ। বর্তমানে এই ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮.২ ট্রিলিয়ন ডলারে। তবে স্বস্তির খবর হলো, ক্রেডিট কার্ড এবং গাড়ি ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
এই সময়ে ক্রেডিট কার্ডের দেনা ২৯ বিলিয়ন ডলার এবং গাড়ি ঋণ ১৩ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়েছে। সাধারণত, বছর শুরুর এই সময়ে ছুটির মরসুমের কেনাকাটার চাপ কমে যাওয়ায় মানুষজন ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া পরিশোধ করে, ফলে ঋণের পরিমাণ কিছুটা হ্রাস পায়।
নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভের গবেষণা অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল ম্যাংগ্রাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ক্রেডিট কার্ড এবং গাড়ির ঋণের ক্ষেত্রে বকেয়া পরিশোধের হার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, ছাত্র ঋণের কিস্তি পরিশোধে বড় ধরনের গড়িমসি দেখা যাচ্ছে।
এই প্রথম পাঁচ বছর পর খেলাপি ছাত্রঋণগুলো ক্রেডিট রিপোর্টে যুক্ত হয়েছে, যা অনেকের ক্রেডিট স্কোরকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ছাত্রঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা তুলে নেওয়ার পরেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। আগে যেখানে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১ শতাংশ, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৭৪ শতাংশে।
এই পরিস্থিতি মার্কিন অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, ভোক্তাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলে। যদিও এই মুহূর্তে এই তথ্য সরাসরি বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলবে না, তবে বৈশ্বিক অর্থনীতির দিকে তাকালে দেখা যায়, ঋণ ব্যবস্থাপনার এই ধরনের পরিবর্তন ব্যক্তিপর্যায়ে আর্থিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
(১ মার্কিন ডলার = ১১০ টাকা ধরে)
তথ্য সূত্র: সিএনএন