ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সি সাম্রাজ্য: বাড়ছে বিতর্ক, বাড়ছে উদ্বেগ
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর পরিবারের ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার বিস্তার নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্রে খবর এসেছে, ট্রাম্প পরিবারের এই ডিজিটাল মুদ্রা-কেন্দ্রিক ব্যবসা বাড়ছে, যা তাঁদের নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে।
সমালোচকরা বলছেন, এই ব্যবসার মাধ্যমে ট্রাম্প ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।
জানা গেছে, ট্রাম্প পরিবারের ব্যবসায়িক তালিকায় যুক্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি বিষয়। এর মধ্যে রয়েছে, ‘মিম কয়েন’ নামে পরিচিত, কোনো উপযোগিতা না থাকা ডিজিটাল মুদ্রা এবং ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফাইনান্সিয়াল’ নামক একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ, যারা নিজস্ব টোকেন চালু করেছে।
এছাড়া, যেকোনো বিনিয়োগকারী খুব শীঘ্রই ‘আমেরিকান বিটকয়েন’-এর শেয়ার কিনতে পারবেন, যে ক্রিপ্টোকারেন্সি খনি কোম্পানিটির সঙ্গে ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র জড়িত।
সোমবার (গতকালের) রাতে খবর আসে, ট্রাম্পের একটি ‘মিম কয়েন’ -এর শীর্ষ হোল্ডারদের সঙ্গে একটি বিশেষ ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
এই ডিনারে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তাঁর একটি ব্যক্তিগত ক্লাবে ‘ভিআইপি ট্যুর’-এর সুযোগ রাখা হয়েছে।
এই ডিনার নিলামে তোলার বিষয়টি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, এর মাধ্যমে ট্রাম্প কার্যত তাঁর পদের সুযোগ বিক্রি করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অতীতেও বিভিন্ন সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
তবে ক্রিপ্টোকারেন্সির জগতে লেনদেনের গোপনীয়তা এবং এর বিশাল আকারের কারণে দুর্নীতির আশঙ্কা অনেক বেশি।
উদাহরণস্বরূপ, গত এক মাসে ট্রাম্পের ‘মিম কয়েন’-এ প্রায় ১৪৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্ত দুটি সংস্থার কাছে এই কয়েনের প্রায় ৮০ শতাংশ রয়েছে।
এই সংস্থাগুলো লেনদেন ফি থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করছে।
অন্যদিকে, ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফাইনান্সিয়াল’-এর সঙ্গে সংযুক্ত একটি ঘটনাও উদ্বেগের কারণ।
জানা গেছে, আবুধাবি সরকারের একটি ভেঞ্চার ফান্ড এই কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার জমা রাখার চুক্তি করেছে।
এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত একটি বিল সিনেটে আটকে যায়।
এই প্রসঙ্গে, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রাম্প এবং তাঁর পরিবারের ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
কারণ, এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব, যা সনাতন পদ্ধতিতে সম্ভব নয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে অবশ্য ট্রাম্পের ব্যবসায়িক স্বার্থ নিয়ে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, ক্রিপ্টোকারেন্সির জগতে স্বচ্ছতার অভাব এবং এর বিশাল আকারের কারণে দুর্নীতির ঝুঁকি অনেক বেশি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন