কর্মঘণ্টা এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য: নতুন গবেষণায় উদ্বেগের কারণ
কর্মজীবনের সাথে জড়িত মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তাদের কর্মঘণ্টা। অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরই প্রভাব ফেলে না, বরং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাতেও ফেলতে পারে নেতিবাচক প্রভাব।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন, তাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়।
গবেষণাটি মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মীদের উপর করা হয়েছে। কোরিয়ান শ্রম আইন অনুযায়ী, সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টা কাজকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গবেষকরা দেখেছেন, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা মানুষের মানসিক স্থিতিশীলতা এবং জ্ঞানীয় ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ, বেশি সময় ধরে কাজ করলে আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে এবং মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো মানসিক প্রক্রিয়াগুলোতেও দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
গবেষণায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। অতিরিক্ত কাজ শুরু করার প্রথম দিকে মস্তিষ্কের কিছু অংশে, বিশেষ করে যে অংশগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণের সাথে জড়িত, সেখানে সাময়িক সময়ের জন্য বৃদ্ধি হতে পারে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে এমনটা চলতে থাকলে মস্তিষ্কের গঠন এবং কার্যকারিতায় খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করে।
যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি যদি দেখি, সেখানে কর্মীদের জন্য সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করা সাধারণত অবৈধ। তবে কিছু ক্ষেত্রে, যেমন জরুরি পরিষেবা বা সশস্ত্র বাহিনীতে, এই নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়।
বাংলাদেশে কর্মীদের কাজের সময় নিয়ে তেমন কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে কর্মীদেরকে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাজ করতে হয়।
এমন পরিস্থিতিতে, এই গবেষণাটি আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা এবং কর্মীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
কর্মীর সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে নীতিনির্ধারক এবং কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান