আজকাল অনেকেরই সুন্দর একটি বাগান করার শখ থাকে, কিন্তু সময়ের অভাবে অথবা সঠিক ধারণা না থাকার কারণে সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না।
তবে, কিছু সহজ কৌশল জানা থাকলে, অল্প পরিশ্রমেও আপনার বাগানটিকে আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব। চলুন, তেমনই কিছু কার্যকরী টিপস জেনে নেওয়া যাক যা আপনার বাগানকে আরও সুন্দর করে তুলবে।
১. রং-এর জাদু:
বাগানে রং যোগ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ফুল ব্যবহার করা। তবে, ফুলের পাশাপাশি অন্য কিছু উপায়েও আপনি আপনার বাগানকে আরও আকর্ষণীয় করতে পারেন।
যেমন, পুরনো টবে চক-পেইন্ট করে নতুন রূপ দিন। আপনার বারান্দা অথবা বাগানের দেয়াল অথবা বেড়াগুলোতে পছন্দের রং ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের (যেমন: লাল, কমলা) ব্যবহার আপনার বাগানে ভিন্নতা আনবে।
২. ‘নো-ডিগ’ পদ্ধতি:
সাধারণত, গাছ লাগানোর জন্য মাটি খুঁড়তে হয়, যা বেশ কষ্টকর। তবে, ‘নো-ডিগ’ পদ্ধতিতে মাটি না খুঁড়েও আপনি আপনার বাগান তৈরি করতে পারেন।
এক্ষেত্রে, আগাছা পরিষ্কার করে মাটির উপরে কম্পোস্ট বা জৈব সার (যেমন: গোবর সার) ৩-৫ ইঞ্চি পুরু করে বিছিয়ে দিন। এরপর গাছের চারা লাগান এবং মালচিং (যেমন: কাঠের গুঁড়ো) ব্যবহার করুন।
এই পদ্ধতিতে আপনার গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান হয় এবং নিয়মিত জল দেওয়ারও প্রয়োজন হয় না।
৩. সঙ্গী নির্বাচন:
কিছু গাছ আছে যারা একে অপরের ভালো বন্ধু। এদের একসাথে রোপণ করলে তারা একে অপরের উপকার করে।
যেমন, গোলাপ গাছের পাশে রোজমেরি বা থাইম জাতীয় গুল্ম লাগালে পোকার আক্রমণ কম হয়। আবার, টমেটোর সাথে তুলসী গাছ লাগালে টমেটোর স্বাদ বাড়ে।
৪. আগাছা দমন:
আগাছা পরিষ্কার করা অনেক সময় কষ্টকর হতে পারে। এক্ষেত্রে, কাগজের কারুকার্য কাজে লাগিয়ে আগাছা দমন করতে পারেন।
যে স্থানে আগাছা জন্মেছে, সেখানে পুরনো, মসৃণতাহীন (চকচকে অংশ ছাড়া) কাগজের স্তর বিছিয়ে দিন। এরপর, মালচিং ব্যবহার করুন।
কাগজ মাটির সাথে মিশে গিয়ে সার তৈরি করবে এবং আগাছাও দমন হবে।
৫. বন্যতা:
বাগানের একপাশে কিছু ঘাস এবং বুনো ফুল লাগিয়ে আপনি আপনার বাগানকে অন্যরকম রূপ দিতে পারেন।
এর ফলে, মৌমাছি ও প্রজাপতির মতো উপকারী পোকামাকড় আকৃষ্ট হবে, যা আপনার বাগানের জন্য ভালো।
৬. আলোর ব্যবহার:
সন্ধ্যার পরে আপনার বাগানকে আলোকিত করার জন্য লাইটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাগানে আলো লাগানোর সময়, নিরাপত্তা এবং সৌন্দর্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৭. জল-সহিষ্ণু গাছ:
বৃষ্টির জল বা খরায় গাছের ক্ষতি হতে পারে। তাই, আপনার বাগানে জল-সহিষ্ণু গাছ (যেমন: ল্যাভেন্ডার, ফিগ ট্রি) লাগান।
৮. ঘাস কাটার ঝামেলা থেকে মুক্তি:
বর্তমানে, বাজারে ঘাস কাটার জন্য বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র (যেমন: Honda Miimo) পাওয়া যায়। তবে, বাংলাদেশে এগুলোর সহজলভ্যতা ও দামের বিষয়টি বিবেচনা করে, আপনি আপনার ঘাস কাটার জন্য স্থানীয় কর্মী নিয়োগ করতে পারেন অথবা ম্যানুয়ালি ঘাস কাটার ব্যবস্থা করতে পারেন।
এই টিপসগুলো অনুসরণ করে, আপনি আপনার বাগানকে আরও আকর্ষণীয় এবং উপভোগ্য করে তুলতে পারেন।
তথ্য সূত্র: The Guardian