ভবিষ্যতের ভয়ে সঙ্গী খুঁজছেন ৫৫ বছরের এক ব্যক্তি: এটা কি স্বার্থপরতা?
জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এসে পৌঁছেছেন ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তিনি এমন একটি সম্পর্কের কথা ভাবছেন, যা ভালোবাসা বা আবেগের পরিবর্তে মূলত ভবিষ্যতের ভয় থেকে উৎসারিত।
তিনি একা থাকতে চান না, বিশেষ করে বার্ধক্যে অসুস্থতা ও একাকীত্বের হাতছানিতে ভীত তিনি। এমন ভাবনাকে তিনি সম্ভবত এতদিন দুর্বলতা হিসেবেই বিবেচনা করতেন।
বাবা অসুস্থ হওয়ার পর তাঁর দেখাশোনার অভিজ্ঞতা, বাবার স্ত্রীর নিরলস সেবা এবং পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া সমর্থন—এসব কিছু তাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।
হাসপাতালের বেডে একা থাকার কষ্টের চেয়ে আপনজনের পাশে থাকার শান্তি তাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। একাকীত্বের কারণে জীবনের কঠিন দিনগুলো কেমন হবে, সেই ভাবনা এখন তাকে অস্থির করে তোলে।
অতীতে তিনি সম্পর্কের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কারও প্রতিই ভালোবাসার অনুভূতি জাগেনি। তাই একাকী জীবনকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে—এমন একটা ধারণা তাকে তাড়া করছে। এখন তিনি দ্বিধায় পড়েছেন—কী করা উচিত?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ভাবনা অস্বাভাবিক নয়। মানুষ যখন একা থাকতে চায় না, তখন সঙ্গ খোঁজাটা স্বাভাবিক।
অনেক সময় ভালোবাসার থেকেও বেশি প্রয়োজন হয় একজন নির্ভরযোগ্য মানুষের, যিনি সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন। জীবনের এই পর্যায়ে এসে সঙ্গী খোঁজার পেছনে ভয়ের অনুভূতি থাকলেও, এটিকে দুর্বলতা হিসেবে দেখার কোনো কারণ নেই।
বরং, এই উপলব্ধি থেকে নতুন করে সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তোলা যেতে পারে।
সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে শুধু আকর্ষণই যথেষ্ট নয়, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও একসঙ্গে পথ চলার মানসিকতাও জরুরি। ভালোবাসার জন্ম হয় ধীরে ধীরে, একসঙ্গে পথ চলার মধ্য দিয়ে।
যেমন, অসুস্থ বাবাকে সন্তানেরা যেভাবে ভালোবাসেন, তা কোনো পরীক্ষার ফল নয়, বরং একসঙ্গে কাটানো সময়ের ফসল। পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এবং একসঙ্গে ভালো থাকার অঙ্গীকারই সম্পর্কের মূল ভিত্তি।
আসলে, ভালোবাসার জন্ম হয় দুটি মানুষের পারস্পরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে। একজন মানুষ যেমন সঙ্গীর কাছ থেকে কিছু আশা করেন, তেমনি সঙ্গীর জন্য কিছু করতেও প্রস্তুত থাকতে হয়।
তাই, ভবিষ্যতের ভয়ে হলেও, সঙ্গীর হাত ধরাটা খারাপ কিছু নয়। বরং, এটি নতুন করে জীবন শুরু করার একটি সম্ভাবনা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান