শিরোনাম: ট্রাম্পের পদক্ষেপের পর, আমেরিকায় ‘বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি’ (DEI) কর্মসূচি বন্ধের হিড়িক
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে রিপাবলিকান দল নিয়ন্ত্রিত সরকারগুলো ‘বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি’ (Diversity, Equity, and Inclusion – DEI) বিষয়ক কর্মসূচিগুলো বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই পদক্ষেপের পক্ষে সমর্থন জানানোয়, এই প্রবণতা আরও বেড়েছে।
এখন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন স্তরে DEI কর্মসূচিগুলো বাতিল করার তোড়জোড় চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press) -এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত বছরগুলোর তুলনায় এবার এই ধরনের পদক্ষেপ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। মূলত, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কারণেই এই পরিবর্তন এসেছে।
এইসব আদেশের মাধ্যমে ফেডারেল সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়গুলোতে DEI কর্মসূচি বন্ধ করার চেষ্টা চলছে, যদিও এর বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, DEI কর্মসূচিগুলো মূলত সমাজে বৈচিত্র্য আনা, সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়।
এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো, সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মচারীসহ সমাজের সকল মানুষের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়।
তবে, রিপাবলিকান নেতারা মনে করেন, DEI নীতিগুলি আসলে বিভেদ তৈরি করে এবং মেধার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
তাদের মতে, এই ধরনের কর্মসূচিগুলি সমাজের কিছু মানুষকে বিশেষ সুবিধা দেয়, যা অন্যদের প্রতি বৈষম্যমূলক।
বিভিন্ন রাজ্যের আইন অনুযায়ী, DEI-এর সংজ্ঞা ভিন্ন হতে পারে।
তবে, এই সংক্রান্ত বেশিরভাগ বিধিনিষেধের মূল লক্ষ্য হলো জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা যৌন পরিচয়-এর ভিত্তিতে বিশেষ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা। ওকলাহোমা এবং ওয়াইওমিং-এর মতো রাজ্যগুলি DEI কার্যক্রমের সংজ্ঞা আরও সংকীর্ণ করেছে।
বর্তমানে, মিসৌরি এবং ওকলাহোমার আইনসভায় DEI বিষয়ক বিধিনিষেধগুলি অনুমোদন লাভ করেছে।
এছাড়াও, আরকানসাস, আইডিহো, কেনটাকি, মিসিসিপি, ওহাইও, টেনিসি, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া এবং ওয়াইওমিং-এও একই ধরনের আইন পাস হয়েছে।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এই বিষয়ে এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে DEI কর্মসূচিগুলোকে ‘বিভাজন সৃষ্টিকারী’ এবং ‘নতুন ধরনের বর্ণবাদ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, DEI বিষয়ক বিতর্ক ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।
এই বিতর্কের মূল বিষয় হলো, সমাজে সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা যায় কিনা, এবং কিভাবে তা করা যায়।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস