পশ্চিম এশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চলা অস্থিরতার মধ্যে, ইসরায়েল এবং সিরিয়ার মধ্যে বিরল সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি ইসরায়েলি সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আজারবাইজানে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অপারেশনস ডিরেক্টরের প্রধান মেজর জেনারেল ওডেড বাসিয়ুক-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সিরিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলিত হন।
তুরস্কের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই বৈঠকটি সম্পন্ন হয়।
আলোচনার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিরিয়ায় ইসরায়েলের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল দেশটির অভ্যন্তরে তাদের সামরিক কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে।
তারা সিরিয়ার কিছু অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং সামরিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা রুখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
অন্যদিকে, সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারারার সরকারও ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তিনি এর আগে বলেছিলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে তারা এই ধরনের আলোচনা করছেন।
সম্প্রতি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবে আল-শারারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নেওয়ার পরিবর্তে কিছু ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও জানিয়েছেন, বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আশঙ্কা প্রকাশ করে ট্রাম্পকে নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি মনে করেন, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলে তা ৭ অক্টোবরের হামাসের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই আলোচনা এবং কূটনৈতিক তৎপরতা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে। ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক হবে।
তবে, এখনই এর ফল পাওয়া যাবে কিনা, তা বলা কঠিন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন