মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘৮৬’ শব্দটি নিয়ে বিতর্ক: প্রাক্তন এফবিআই প্রধানের একটি পোস্ট ঘিরে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন এফবিআই প্রধান জেমস কোমি’র একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ঘিরে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত একটি বিশেষ শব্দবন্ধকে কেন্দ্র করে, যা সাধারণত খাদ্য পরিবেশন শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শব্দের ব্যবহার এখন ভিন্ন তাৎপর্য বহন করছে।
জানা যায়, জেমস কোমি সম্প্রতি তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সমুদ্র সৈকতে কুড়িয়ে পাওয়া কিছু শামুকের ছবি পোস্ট করেন। ছবিগুলোর সঙ্গে তিনি ‘৮৬ ৪৭’ লিখে ক্যাপশন জুড়ে দেন। এই ‘৮৬’ শব্দটির সঙ্গেই যত বিতর্কের শুরু।
আসলে, ‘৮৬’ শব্দটির উৎপত্তিস্থল হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রেস্টুরেন্ট বা খাদ্য পরিবেশন শিল্প। সাধারণত, কোনো মেনু আইটেম শেষ হয়ে গেলে বা পাওয়া না গেলে, কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে ‘৮৬’ কোড ব্যবহার করে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর অর্থ কিছুটা বিস্তৃত হয়েছে। কোনো অপ্রয়োজনীয় বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তিকে বোঝাতেও এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু কোমির এই পোস্টের পরই রিপাবলিকান দলের নেতারা এর ভিন্ন অর্থ খোঁজা শুরু করেন। তাদের মতে, কোমি সম্ভবত সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘টার্গেট’ করেছেন। কারণ, ট্রাম্প ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। তাদের ধারণা, ‘৮৬ ৪৭’ লেখার মাধ্যমে কোমি হয়তো ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এমনকি, তারা এটিকে হত্যার হুমকি হিসেবেও দেখছেন।
এই বিতর্কের সূত্র ধরে, সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমি জানান, তিনি ছবিগুলো কেবল একটি রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে পোস্ট করেছেন। তার মতে, এর মাধ্যমে তিনি ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার কথা বলতে চেয়েছেন। তবে, রিপাবলিকান দলের নেতারা বিষয়টিকে এত সহজে নিতে রাজি নন। তারা মনে করছেন, কোমি ইচ্ছাকৃতভাবেই এই শব্দ ব্যবহার করে ট্রাম্পকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিতর্কের কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনের তীব্র মেরুকরণ। বর্তমানে, দেশটিতে রাজনৈতিক বিভেদ এতটাই গভীর যে, সামান্য ইঙ্গিতকেও ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ভাষার ব্যবহার এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একই শব্দ বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে বুঝতে পারে, যা অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে।
বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস