সুদানের ক্ষমতা কাঠামোতে বড় পরিবর্তন এসেছে, যেখানে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা কামিল ইদ্রিসকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
সামরিক বাহিনীর প্রধান আল-বুরহানের এই সিদ্ধান্ত সুদানের সার্বভৌম কাউন্সিলেরও একটি অংশ, যেখানে আরও দুইজন নারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে, দেশটির সরকার পরিচালনায় নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কামিল ইদ্রিস দীর্ঘদিন জাতিসংঘে কাজ করেছেন এবং বিশ্ব বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সংস্থার মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুদানে সামরিক বাহিনী এবং দ্রুত সমর্থন বাহিনী বা র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং এক কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ এবং সার্বভৌম কাউন্সিলের পরিবর্তন শান্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখন দেখার বিষয়।
২০১৯ সালে দেশটির দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই সুদানে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এরপর বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা হয়েছে, যা দেশের পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে। আল-বুরহান এবং আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালোর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে মানবিক সংকট আরও বেড়েছে।
খার্তুমসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো দুপক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে। আরএসএফ দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে এবং দক্ষিণের কিছু এলাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সুদানে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এল-ফাশেরের মতো শহরগুলোতে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
নতুন প্রধানমন্ত্রী কামিল ইদ্রিসকে এই সংকটপূর্ণ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাঁর প্রধান কাজ হবে দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা। তবে, বর্তমানে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এটি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা