যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি আবারও ঊর্ধ্বমুখী, যা জানুয়ারী মাসের পর সর্বোচ্চ।
লন্ডন, [বর্তমান মাস] – ব্রিটেনের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি আবারও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এপ্রিল মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৫ শতাংশে, যা গত জানুয়ারী মাসের পর সর্বোচ্চ।
এর আগে মার্চ মাসে এই হার ছিল ২.৬ শতাংশ। সরকারি তথ্যে জানা গেছে, জ্বালানি ও পানির বিলসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি খরচের (domestic bills) কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (Office for National Statistics) জানিয়েছে, এপ্রিল মাসের এই মূল্যবৃদ্ধির হারটি গত অক্টোবর, ২০২২ এর পর সর্বোচ্চ। ওই সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছিল।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আসন্ন মাসগুলোতেও মূল্যস্ফীতি ৩ শতাংশের উপরে থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনাও কমে আসতে পারে, যেখানে তাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী বছর মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে পারে। এর কারণ হিসেবে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্প্রতি হওয়া বাণিজ্য চুক্তির কথা বলছেন, যার ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাতিল হয়েছে।
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ রব উড মনে করেন, সুদের হার কমানোর ক্ষেত্রে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের তরফে আরও সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
এদিকে, মূল্যস্ফীতির এই ঊর্ধ্বগতি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সরকারের জন্য একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। গত জুলাই মাসে তারা ১৪ বছর পর পুনরায় ক্ষমতায় আসে।
সম্প্রতি, লেবার সরকার তাদের অর্থনৈতিক সাফল্যের কিছু দিক তুলে ধরেছিল, যার মধ্যে ছিল প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি এবং কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা উল্লেখযোগ্য।
এ বিষয়ে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী (Finance Minister) র্যাচেল রিভস বলেন, “আমি এই পরিসংখ্যানে হতাশ। কারণ আমি জানি, জীবনযাত্রার ব্যয় এখনও সাধারণ মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।”
অন্যদিকে, বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের ব্যবসায়ের উপর কর বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে দায়ী করছে। কনজারভেটিভ পার্টির অর্থনীতি বিষয়ক মুখপাত্র মেল স্ট্রাইড বলেন, “লেবার চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্তের ফল দিচ্ছে পরিবারগুলো।”
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস