যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনা এখন গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়েছে, যেখানে উভয় পক্ষই তাদের মধ্যকার সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে চাইছে।
লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে, দেশ দুটি তাদের মধ্যকার বিদ্যমান কিছু বাণিজ্য চুক্তি রক্ষার চেষ্টা করছে। জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বাণিজ্য প্রতিনিধি দলকে চীনের প্রতি কিছু রপ্তানি বিধিনিষেধ শিথিল করার অনুমতি দিয়েছেন।
আলোচনার মূল বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে বিরল মৃত্তিকা খনিজ (rare earth minerals) সরবরাহের নিশ্চয়তা চাইছে। এই খনিজগুলো অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিকস, যানবাহন এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য।
অন্যদিকে, চীন চাইছে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, যেমন – সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তির উপর থেকে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করুক।
বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং চীনা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ভাইস প্রিমিয়ার লি ফেং।
আলোচনা শেষে উভয় পক্ষই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। তবে, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেইজিং সম্ভবত বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলোর উপর তাদের কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ সহজে ছাড়তে চাইবে না।
চীনের এই খনিজগুলোর উপর একচেটিয়া আধিপত্য বাণিজ্য আলোচনার ক্ষেত্রে তাদের দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়িয়েছে।
আলোচনা চলার মধ্যেই, যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে চীন বিরল মৃত্তিকা খনিজ রপ্তানিতে বাধা দিচ্ছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীন কিছু রপ্তানি অনুমোদন করেছে বলে জানা গেছে। তবে, বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, এপ্রিল মাসের আগের তুলনায় বিশ্ব বাজারে চীনের বিরল মৃত্তিকা খনিজ সরবরাহ সম্ভবত সীমিত থাকবে।
চীনের অর্থনীতিও বর্তমানে কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। মে মাসে দেশটির সামগ্রিক রপ্তানি বৃদ্ধি ছিল মাত্র ৪.৮ শতাংশ, যা আগের মাসের তুলনায় কম।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চীনের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা দেশটির বাণিজ্য-নির্ভর অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। একই সময়ে, চীনে মূল্যস্ফীতিও দেখা যাচ্ছে, যা দেশটির অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলছে।
যুক্তরাষ্ট্র চাইছে চীনের বাজারে প্রবেশাধিকার আরও বাড়ানো হোক।
অন্যদিকে, চীন তাদের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।
বাণিজ্য আলোচনায় এই বিষয়গুলো কতটা গুরুত্ব পাবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এই বাণিজ্য আলোচনার ফলে বাংলাদেশের উপরও কিছু প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসলে, তা বাংলাদেশের রপ্তানি-নির্ভর শিল্পখাতকে প্রভাবিত করতে পারে।
তবে, এর সরাসরি প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন