যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট এয়ারলাইন্স সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স তাদের দীর্ঘদিনের একটি ঐতিহ্য থেকে সরে আসছে। এতদিন যাত্রীদের বিনামূল্যে দুইটি ব্যাগ বহনের সুযোগ দিলেও, এখন থেকে তাদের টিকিটের সাথে লাগেজ চেকিংয়ের জন্য আলাদা ফি দিতে হবে।
আগামী বুধবার থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম ব্যাগের জন্য ৩৫ ডলার এবং দ্বিতীয় ব্যাগের জন্য ৪৫ ডলার ফি ধার্য করা হয়েছে।
সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স কয়েক দশক ধরে তাদের এই নীতির জন্য পরিচিত ছিল, যা তাদের প্রতিযোগী অন্যান্য এয়ারলাইন্স থেকে আলাদা করে পরিচিতি এনেছিল। কিন্তু এখন তারা তাদের ব্যবসায়িক মডেলের পরিবর্তন আনছে, যেখানে যাত্রীদের লাগেজ চেকিংয়ের জন্য অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে যারা এয়ারলাইন্সের ‘র্যাপিড রিওয়ার্ডস’ প্রোগ্রামের শীর্ষ স্তরে নেই, অথবা ‘বিজনেস ক্লাস’ টিকিট কেনেননি, অথবা এয়ারলাইন্সের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন না, তাদের এই ফি দিতে হবে।
তবে, সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স তাদের ‘র্যাপিড রিওয়ার্ডস এ-লিস্ট প্রিফার্ড’ সদস্য এবং ‘বিজনেস সিলেক্ট’ শ্রেণির যাত্রীদের জন্য এখনো দুইটি ব্যাগ বিনামূল্যে বহনের সুযোগ দেবে। এছাড়া, ‘এ-লিস্ট’ সদস্য এবং অন্যান্য কিছু নির্বাচিত যাত্রী একটি বিনামূল্যে ব্যাগ নিতে পারবেন।
র্যাপিড রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরাও একটি ব্যাগের জন্য ছাড় পাবেন।
এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, এই পরিবর্তনের ফলে তারা বছরে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করতে পারবে। তবে, বিনামূল্যে ব্যাগ বহনের সুবিধা তুলে নেওয়ায় তাদের ব্যবসা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে, এর ফলে গ্রাহক কমে যাওয়ার কারণে প্রায় ১.৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
শুধু লাগেজ ফি-ই নয়, সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স তাদের যাত্রী সেবার ধরনেও কিছু পরিবর্তন আনছে। তাদের বিমানে এখন থেকে আসন নির্দিষ্ট করা হবে, যা আগে উন্মুক্ত ছিল।
এছাড়াও, বেশি পা রাখার জায়গার জন্য অতিরিক্ত ফি এবং রাতের ফ্লাইটের মতো বিষয়গুলোও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বর্তমানে, সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স তাদের মুনাফা ও রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি, তারা কর্মী ছাঁটাইয়েরও ঘোষণা করেছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে, তারা তাদের কর্পোরেট কর্মীর ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১,৭৫০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। কোম্পানিটি এখন সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের চাপে রয়েছে, যারা তাদের মুনাফা বাড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাউথওয়েস্টের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর টিকে থাকার লড়াইয়ের অংশ। এই পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশের ভ্রমণকারীদের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন এবং সাউথওয়েস্টের ফ্লাইট ব্যবহার করেন।
টিকিটের দামে এর প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস