মাল্টিভিটামিন: সবার জন্য কি এটা প্রয়োজনীয়?
আজকাল স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে মাল্টিভিটামিন সেবনের প্রবণতা। অনেকেই মনে করেন, মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করলে শরীরের প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ হয়।
কিন্তু সত্যিই কি সবার জন্য মাল্টিভিটামিন দরকার? নাকি এর কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে? চলুন, বিশেষজ্ঞদের মতামত জেনে নেওয়া যাক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাল্টিভিটামিন সবার জন্য উপকারী নাও হতে পারে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োজনীয় হতে পারে, আবার কারও ক্ষেত্রে এটি তেমন কোনো উপকার নাও করতে পারে।
এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে মাল্টিভিটামিন সেবন শরীরের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণ করলে বমি ভাব, পেট খারাপ, এমনকি লিভার বা কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।
এছাড়াও, মাল্টিভিটামিনে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম বা জিঙ্কের মতো কিছু উপাদান থাকে যা অ্যান্টিবায়োটিক বা থাইরয়েড-এর ঔষধের সঙ্গে মিশে গেলে তাদের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
তাহলে, কাদের মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উপকারী হতে পারে।
কাদের মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত নয়?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মাল্টিভিটামিন সেবন করা উচিত নয়। কিছু ঔষধের সাথে মাল্টিভিটামিন-এর বিক্রিয়া হতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
উদাহরণস্বরূপ, রক্ত জমাট বাঁধার ঔষধ (যেমন, ওয়ারফারিন) সেবনকারীদের ভিটামিন কে সমৃদ্ধ মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ এটি ঔষধের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
এছাড়াও, মাল্টিভিটামিনে এমন কিছু উপাদান থাকতে পারে যা অন্যান্য ঔষধের সঙ্গে মিশে শরীরের ক্ষতি করতে পারে। তাই, মাল্টিভিটামিন সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মাল্টিভিটামিন-এর উপাদান ও সতর্কতা
মাল্টিভিটামিন-এর উপাদানগুলি ভালোভাবে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ, বাজারে উপলব্ধ সব মাল্টিভিটামিন একই মানের নাও হতে পারে। কিছু মাল্টিভিটামিনে ভিটামিন এবং খনিজ লবণের মাত্রা বেশি থাকতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণ করলে বমি ভাব, মাথা ঘোরা এবং লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
মনে রাখবেন, মাল্টিভিটামিন কোনো জাদু-ঔষধ নয়। এটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার একটি পরিপূরক হতে পারে, কিন্তু খাদ্য, ঘুম এবং শারীরিক কার্যকলাপের মতো স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলির বিকল্প নয়।
উপসংহার
মাল্টিভিটামিন সেবনের আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনার শরীরের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী, চিকিৎসক সঠিক মাল্টিভিটামিন নির্বাচন করতে এবং এর সঠিক ডোজ সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারবেন।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম এবং নিয়মিত ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক