যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো আন্তর্জাতিক সম্প্রচার, যা বিভিন্ন দেশে নির্ভরযোগ্য সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কাজ করে। ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনার মধ্যে, এই সম্প্রচার ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিশেষ করে, ভয়েস অফ আমেরিকা (VOA) এবং রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি (RFE/RL)-এর ফার্সি ভাষার সম্প্রচার কার্যক্রম আবারও সক্রিয় হওয়ায় বিষয়টি নতুন মোড় নিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন এই দুটি সংস্থার কার্যক্রম সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
মূলত, ট্রাম্প প্রশাসনের একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রচার সমর্থন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ফলে, ভয়েস অফ আমেরিকার (VOA) অনেক কর্মী বেতনসহ ছুটিতে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির (RFE/RL) কার্যক্রমও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
তবে, ইসরায়েল কর্তৃক সম্প্রতি ইরানের অভ্যন্তরে আঘাত হানার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ইসরায়েলের ওই পদক্ষেপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই VOA-র ফার্সি ভাষার বিভাগের কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়। বর্তমানে, VOA-র ফার্সি ভাষার সংবাদ পরিষেবাগুলি ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের খবর পরিবেশন করতে শুরু করেছে।
যদিও VOA-র পরিচালক, মাইকেল আব্রামোভিটস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি অবগত নন, তবে কর্মীদের দ্রুত সংবাদ পরিবেশন করার জন্য তিনি তাদের প্রশংসা করেছেন।
একই সঙ্গে, তিনি উল্লেখ করেন, VOA-র ফার্সি ভাষার কার্যক্রম আগে যা ছিল, এখন তার তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ ছোট হয়ে গেছে।
এদিকে, রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির (RFE/RL)-এর ফার্সি বিভাগের ডিজিটাল ট্র্যাফিকের পরিমাণ শুক্রবার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
রেডিও ফাদার সম্পাদক ইন-চিফ নিকোলা নাতাশা কারিম এক স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, যদি কারি লেক বা ইরান সরকার তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারত, তবে ইরানের লক্ষ লক্ষ মানুষ নির্ভরযোগ্য তথ্যের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় প্রচারণার শিকার হতো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং একাধিক ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করা, নিকোলাস বার্নস এক টুইটে লিখেছেন, ভয়েস অফ আমেরিকার কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ‘কূটনৈতিকভাবে আত্মঘাতী’ ছিল।
রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ডন বেকনও এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের গণমাধ্যম, যা আমেরিকার কথা তুলে ধরে এবং স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে বসবাসকারী মানুষের কাছে সত্য পৌঁছে দেয়, তাদের কার্যক্রম বন্ধ করা ‘অদূরদর্শী’ সিদ্ধান্ত ছিল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন