যুক্তরাষ্ট্র সরকার কানাডা ও মেক্সিকোর উপর আরোপিত শুল্কের কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারেন।
মঙ্গলবার শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণার পর মার্কিন শেয়ার বাজারে যে অস্থিরতা দেখা দেয়, এবং ভোক্তাদের মধ্যে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
ব্লুমবার্গ টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লুটনিক জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্ভবত অটোমোবাইলসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিতে পারেন।
তিনি বলেন, “শুল্ক থাকবে, তবে বাজারের কিছু অংশে, হয়তো এপ্রিল মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত তিনি ছাড় দিতে পারেন।”
২রা এপ্রিল, ট্রাম্প অন্যান্য দেশগুলোর শুল্ক, কর এবং ভর্তুকির সাথে সামঞ্জস্য রেখে “পাল্টাপাল্টি” শুল্ক ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন।
এর ফলে বিশ্বজুড়ে শুল্কের হার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং একটি বৃহত্তর বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
লুটনিক বুধবার সকালে কানাডা ও মেক্সিকোর সম্ভাব্য বিকল্পগুলো নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, উভয় দেশই মাদক পাচার সংক্রান্ত উদ্বেগের সমাধানে কাজ করছে।
কানাডার সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার চায়, কোনো আপস করতে রাজি নয়।
কানাডার অর্থমন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক বলেন, “আমরা কোনো মধ্যপন্থী সমাধানে আগ্রহী নই।
কানাডা চায় শুল্ক প্রত্যাহার করা হোক।”
মঙ্গলবার, ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।
কানাডার জ্বালানি পণ্য, যেমন তেল ও বিদ্যুতের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়।
এছাড়াও, চীনের উপর আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্কের হার বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশ করা হয়।
প্রশাসন দাবি করেছে, এই শুল্কের মূল উদ্দেশ্য হলো ফেন্টানাইল-এর মতো মাদক পাচার বন্ধ করা, তবে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কথাও উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায়, কানাডা ও চীন তাৎক্ষণিকভাবে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মেক্সিকোও রবিবার তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর পরিকল্পনা করছে।
মার্কিন শেয়ার বাজার গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকে অর্জিত সমস্ত লাভ হারিয়েছে এবং ভোক্তারা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অন্যদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপকে দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ট্রুডো মঙ্গলবার বলেন, তার দেশ ২১ দিনের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা, বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী) মূল্যের মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করবে।
চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য রপ্তানির উপর ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
এছাড়াও, তারা প্রায় দুই ডজন মার্কিন কোম্পানির উপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও অন্যান্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
তথ্য সূত্র: এ্যাসোসিয়েটেড প্রেস