যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য এই তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পরেই নেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্কে নতুন মোড় আসতে পারে।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বুধবার জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্কের সব দিক পর্যালোচনা করছে এবং গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত তারই অংশ। তার মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তারই সূত্রে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ পুনরায় চালু করার বিষয়টি নির্ভর করছে শান্তি আলোচনার অগ্রগতির ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক জন র্যাটক্লিফ এই স্থগিতাদেশকে ‘সাময়িক বিরতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, গত সপ্তাহে ওভাল অফিসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে হওয়া বৈঠকের পরই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। র্যাটক্লিফ আরও বলেন, ট্রাম্প জানতে চান, জেলেনস্কি শান্তি আলোচনায় কতটা আন্তরিক।
ওয়াল্টজের ভাষ্যমতে, জেলেনস্কি যদি ট্রাম্পকে বোঝাতে পারেন যে তিনি শান্তি আলোচনায় আগ্রহী, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে খুব দ্রুতই গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ আবার শুরু হতে পারে। তবে, আলোচনার শর্ত মেনেই ইউক্রেনকে এগিয়ে আসতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেন অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো থেকে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ফাইভ আইস’ জোটভুক্ত দেশগুলোও। ‘ফাইভ আইস’ (Five Eyes) হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের একটি গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের জোট। তবে, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের মুখপাত্র ডেভ পেরেস জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য। বিশেষ করে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।