ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (European Central Bank – ECB) সুদের হার কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হলো ইউরোজোনের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা। একইসঙ্গে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপের প্রতিরক্ষা খাতে বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
জার্মানিতে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা দেশটির অর্থনীতিতে নতুন করে এক ট্রিলিয়ন ইউরোর বেশি ঋণ এবং ব্যয়ের সুযোগ তৈরি করবে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে, তেমনিভাবে মূল্যস্ফীতিও বাড়াতে পারে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসিবি’র প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্দে-কে আসন্ন বৈঠকে নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। বিশেষ করে, সুদের হার কত কমানো হবে, সে বিষয়ে তার বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ব্যাংকটি এরই মধ্যে তাদের বেঞ্চমার্ক ডিপোজিট রেট ১.২৫ শতাংশ কমিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার এই হার আরও ০.২৫ শতাংশ কমানো হতে পারে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
বার্কলেস প্রাইভেট ব্যাংকের প্রধান বাজার কৌশলবিদ জুলিয়ান লাফার্জের মতে, ইসিবি পরিস্থিতি অনুযায়ী নমনীয় পদক্ষেপ নেবে। জার্মানির সরকারি ব্যয়ের ফলে জিডিপি’র (GDP) প্রবৃদ্ধি বাড়লেও, মার্কিন শুল্কের কারণে তা কমে যেতে পারে। ডয়েচে ব্যাংকের অর্থনীতিবিদদের ধারণা, ২০২৫ সালের মধ্যে ইসিবি সুদের হার ১.৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারে। তাদের মতে, প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ইতিবাচক প্রভাবের চেয়ে বাণিজ্য যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব বেশি হবে।
ইউরোজোনের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে, যেখানে ইউরো মুদ্রা ব্যবহৃত হয়, গত তিন মাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শূন্যের কোঠায় ছিল। ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির কারণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন, আর ব্যবসায়ীরা ট্রাম্পের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতিতে, ইসিবি’র সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস