মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া এবং টেক্সাস রাজ্যে সরকারি কর্মীদের জন্য দূর থেকে কাজ করার (remote work) সুযোগ সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য দুটির এই পদক্ষেপ কয়েক লক্ষ সরকারি কর্মীর উপর প্রভাব ফেলবে। উভয় রাজ্যের গভর্নরগণ কর্মীর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার এবং অফিসের কাজের পরিবেশকে উন্নত করার কথা উল্লেখ করেছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে কর্মীদের মধ্যে কাজের ধরন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম সম্প্রতি এক আদেশে জানিয়েছেন, আগামী ১লা জুলাই থেকে সরকারি কর্মীদের সপ্তাহে অন্তত চার দিন অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। টেক্সাসেও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টেক্সাসের সরকারি সংস্থাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নতুন নয়। এর আগে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়েও ফেডারেল কর্মীদের জন্য অফিসে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অ্যামাজন, জেপি মরগান চেজ এবং এ টি অ্যান্ড টি-এর মতো বৃহৎ কর্পোরেশনগুলোও তাদের কর্মীদের অফিসে ডেকে পাঠিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার সরকারি কর্মচারী জোনাহ পল জানিয়েছেন, তিনি সপ্তাহে দুদিন ট্রেনে করে তার অফিসে যান, যা বেশ সময়সাপেক্ষ। নতুন নিয়মের কারণে তাকে এখন আরো বেশি সময় অফিসে দিতে হবে। কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, অফিসে নিয়মিত কাজ করার বাধ্যবাধকতা তাদের উৎপাদনশীলতাকে ব্যাহত করতে পারে। টেক্সাসের কর্মচারী রলফ স্ট্রাউবহার মনে করেন, স্বাস্থ্যগত কারণে যাদের বাড়ি থেকে কাজ করার প্রয়োজন, তারা এই সিদ্ধান্তের ফলে অসুবিধায় পড়বেন।
অন্যদিকে, মিসৌরি, ওহাইও এবং ইন্ডিয়ানার মতো রাজ্যগুলোর রিপাবলিকান গভর্নররা মনে করেন, কর্মীদের অফিসে ফেরানো হলে কাজের দক্ষতা বাড়বে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, অফিসের কঠোর নিয়ম কর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি তৈরি করতে পারে এবং ভালো কর্মীরা চাকরি ছাড়তে পারেন। ক্যালিফোর্নিয়া এবং টেক্সাসের এই সিদ্ধান্ত, সরকারি কর্মীদের কাজ করার ধরনে একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসছে, যা কর্মীদের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলবে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এবং কর্মচারী ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস