বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে গ্রীষ্মকালে বাড়ছে চরম তাপমাত্রা, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি
এই গ্রীষ্মে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে, যার ফলে জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর (National Weather Service) এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention – CDC) যৌথভাবে একটি নতুন পূর্বাভাস তৈরি করেছে, যা তাপপ্রবাহের কারণে সৃষ্ট ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। এই পূর্বাভাসে তাপমাত্রার তীব্রতা, অস্বাভাবিকতা এবং সম্ভাব্য সময়কাল বিবেচনা করা হয়েছে। এছাড়াও, অতীতের ডেটা ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাবও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গ্রীষ্মকালে দেশটির একটি বিশাল জনসমষ্টির জীবনযাত্রা তাপপ্রবাহের সতর্কতা, হুঁশিয়ারি এবং পর্যবেক্ষণের আওতায় চলে আসে। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২১শে জুন থেকে ২২শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে, গড়ে ৬০ মিলিয়নের বেশি মানুষ এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে তাপপ্রবাহ এখন অনেক বেশি সাধারণ, তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। রাতের বেলায়ও তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে না, যা মানুষের জন্য স্বস্তি বয়ে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে, গরমের রেকর্ডও ভাঙছে। আবহাওয়া দপ্তর প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চলের সম্ভাব্য তাপমাত্রা এবং রেকর্ড ভাঙার পূর্বাভাস দিয়ে থাকে।
আবহাওয়াবিদরা আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য বিভিন্ন অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা কেমন থাকতে পারে, সে সম্পর্কেও ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, কম নাকি কাছাকাছি থাকবে, তার একটি পূর্বাভাস তারা দিয়ে থাকেন। গাঢ় রংগুলো ইঙ্গিত করে যে ওই অঞ্চলে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধূসর এলাকাগুলোতে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্থানেই দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড ভেঙে গেছে। এই প্রবণতা থেকে বোঝা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্বেই তাপপ্রবাহের ঝুঁকি বাড়ছে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ুর কারণে এখানেও গরমের তীব্রতা বাড়ছে, যা জনস্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে, প্রাক-বর্ষা মৌসুমে যখন তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়, তখন হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
সুতরাং, জলবায়ু পরিবর্তনের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। সবার উচিত আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়মিত দেখা এবং গরম থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।
তথ্য সূত্র: সিএনএন