চীনের প্রযুক্তি জায়ান্ট আলিবাবা তাদের নতুন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) মডেল উন্মোচন করেছে, যা প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
এই মডেলটির নাম দেওয়া হয়েছে QwQ-32B।
আলিবাবার দাবি, তাদের এই নতুন মডেলটি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি ওপেনএআই (OpenAI) এবং ডিপসিকের (DeepSeek) তৈরি করা মডেলের চেয়েও উন্নত পারফর্ম করতে সক্ষম।
এই ঘোষণার পরেই হংকং-এর শেয়ার বাজারে আলিবাবার শেয়ারের দাম ৮ শতাংশ বেড়ে যায়।
আলিবাবার নতুন এআই মডেল উন্মোচনের খবরটি এমন এক সময়ে এলো, যখন চীন সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য উদীয়মান প্রযুক্তিতে ব্যাপক বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
সম্প্রতি, চীন সরকার এআই, হিউম্যানয়েড রোবট এবং কোয়ান্টাম প্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে অর্থ সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীনের এই পদক্ষেপ প্রযুক্তিখাতে দেশটির অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
আলিবাবার নতুন মডেলটি তৈরিতে ৩২০০ কোটি (৩২ বিলিয়ন) প্যারামিটার ব্যবহার করা হয়েছে।
তাদের দাবি, এই মডেলটি গণিত, কোডিং এবং সাধারণ কাজের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।
এটি ওপেনএআই-এর তৈরি করা OpenAI-o1-mini মডেলের চেয়ে অনেক ভালো ফল দেখিয়েছে এবং শক্তিশালী ওপেন সোর্স মডেল DeepSeek-R1 এর কাছাকাছি পারফর্ম করতে পারে।
উল্লেখ্য, প্যারামিটার সংখ্যা যত বেশি, মডেলটি তত বেশি শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এর আগে, গত বছর আলিবাবা তাদের নিজস্ব চ্যাটজিপিটি-এর মতো পরিষেবা ‘টংয়ি কিয়ানওয়েন’ (Tongyi Qianwen) চালু করে।
এছাড়া, এই বছরের শুরুতে তারা ‘Qwen 2.5 Max’ নামে আরেকটি মডেল প্রকাশ করে, যা ডিপসিকের তৈরি করা V3 মডেলের চেয়ে ভালো ফল দেখিয়েছিল।
অন্যদিকে, প্রযুক্তি বিশ্বে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই নিয়ে চলছে জোর প্রতিযোগিতা।
গত কয়েক বছরে, বিশেষ করে ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার পর, এই প্রতিযোগিতা আরও বেড়েছে।
বিভিন্ন কোম্পানি তাদের এআই মডেল উন্নত করতে বিশাল অংকের অর্থ বিনিয়োগ করছে।
এই দৌঁড়ে চীনও পিছিয়ে নেই।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের এই অগ্রগতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করতে পারে।
উন্নত এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে সহায়তা করা যেতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং বাণিজ্য খাতে এআই-এর প্রয়োগ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
তবে, এআই প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের ফলে কিছু চ্যালেঞ্জও দেখা দিতে পারে।
দক্ষ জনশক্তির অভাব এবং ডেটা সুরক্ষা (data security) এর মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।
আলিবাবার এই নতুন এআই মডেলের আত্মপ্রকাশ এবং চীনের প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগের ফলে বিশ্বজুড়ে এআই প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে, যা নিঃসন্দেহে প্রযুক্তি বিশ্বে নতুন উদ্ভাবনের জন্ম দেবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন