মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক অস্থিরতা যখন বাড়ছে, তখন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত কিছু পদক্ষেপ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিটে শেয়ার বাজারের দর পতনের মধ্যে তিনি সাধারণ মানুষের পরিবর্তে ধনকুবের এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ইলন মাস্কের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় অনেকে বিস্মিত হয়েছেন, কারণ এমন এক সময়ে এই সমর্থন জানানো হলো, যখন মার্কিন নাগরিকদের সঞ্চয়ে ধস নামছে।
শেয়ার বাজারের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্পের এমন আচরণ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
একদিকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে ভীতি বাড়ছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প যেন বিশেষভাবে মনোযোগ দিচ্ছেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের দিকে।
হোয়াইট হাউজের দক্ষিণ লনে মাস্কের অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক গাড়ির বহর প্রদর্শন করে ট্রাম্প তাদের প্রশংসা করেন।
এসময় তিনি মাস্কের সমালোচনা ও টেসলা ডিলারশিপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের নিন্দা জানান।
ট্রাম্প মাস্ককে একজন “দেশপ্রেমিক” হিসেবেও উল্লেখ করেন এবং বলেন, “একজন দেশপ্রেমিক হওয়ার কারণে তাকে তিরস্কার করা উচিত নয়।”
এদিকে, ট্রাম্পের এই সমর্থন টেসলার শেয়ারের দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
মঙ্গলবার ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ৪৭৮ পয়েন্ট বা ১.৪% কমে গেলেও, টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩.৮%
ট্রাম্প এক বক্তব্যে জানান, তিনি আশা করেন এই সমর্থন কোম্পানির বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন মাস্কের ব্যবসার প্রসার ঘটবে, তেমনি তা প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার স্বার্থের সংঘাত তৈরি করতে পারে।
কারণ, মাস্ক সরকারের নীতি ও নিয়ম তৈরিতে প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা রাখেন।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি নিয়েও দেখা যাচ্ছে অস্থিরতা।
সম্প্রতি কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে তার বিরোধ দেখা দেয়, যা বাজারের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
কানাডার ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
তবে, এই ধরনের অপ্রত্যাশিত নীতি পরিবর্তনের কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের নীতিগুলো একদিকে যেমন কিছু মানুষের কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে, তেমনি তা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে, যা বিশ্ব বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন