যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কর্মপরিবেশে পরিবর্তনের এক গভীর উদ্বেগের চিত্র ফুটে উঠেছে। দেশটির অভিজ্ঞ সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, সরকারের কার্যকারিতা হ্রাস এবং জনসাধারণের সম্পদের অপচয় হতে পারে এমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ। সম্প্রতি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের ফলে এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের বিভিন্ন বিভাগে কর্মী ছাঁটাই এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন আনার ফলে দীর্ঘমেয়াদে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষভাবে, সরকারি কর্মকর্তাদের অপসারণের প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে, অনেকে একে জনসাধারণের সম্পদ ধ্বংসের শামিল হিসেবে দেখছেন।

এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে সরকারি কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যয় সংকোচনের কথা বলা হলেও, সমালোচকরা বলছেন এর পেছনের আসল উদ্দেশ্য ভিন্ন। তারা মনে করেন, সরকারের কিছু নীতি নির্ধারকের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে এই পরিবর্তনগুলো আনা হচ্ছে। সরকারের এমন পদক্ষেপের ফলে সরকারি কাজে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারেরও আশঙ্কা রয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য কর্মীদের দক্ষতা এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। তবে, সমালোচকরা বলছেন, বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের অপসারণের ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা কর্মীর দক্ষতা মূল্যায়নের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়াও, সরকারের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের প্রধানদের সরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে, যা দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে দুর্বলতা তৈরি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের এমন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত দেশের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে একদিকে যেমন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, তেমনি জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে, প্রযুক্তি ব্যবসায়ী এলন মাস্কের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সরকারি নীতি-নির্ধারণের সঙ্গে যুক্ত করা নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এমন ব্যক্তিদের যুক্ত করার ফলে নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতা কমে যেতে পারে এবং সরকারের সিদ্ধান্তগুলো প্রভাবিত হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা নেওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, মেধা এবং যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এছাড়াও, সরকারি নীতি-নির্ধারণে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং জবাবদিহিতা বজায় রাখা জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন