পেপসিকো’র স্বাস্থ্যকর সোডার বাজারে প্রবেশ, ১.৬ বিলিয়ন ডলারে কিনছে ‘পপি’
বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ার সাথে সাথে খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোও তাদের পণ্য তালিকায় পরিবর্তন আনছে। তারই ধারাবাহিকতায়, জনপ্রিয় কোমল পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানি পেপসিকো এবার প্রি-বায়োটিক সোডার বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
সম্প্রতি, তারা ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১৭,৬০০ কোটি বাংলাদেশী টাকা) ব্যয়ে ‘পপি’ নামক একটি প্রি-বায়োটিক সোডা প্রস্তুতকারক কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করেছে।
কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ধীরে ধীরে চিনিযুক্ত পানীয় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদা কমিয়ে স্বাস্থ্যকর বিকল্পের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে, গত জানুয়ারিতে তারা ১.২ বিলিয়ন ডলারে গ্লুটেন-মুক্ত চিপস প্রস্তুতকারক ‘সিয়েতে ফুডস’ কিনেছিল।
এছাড়াও, গত বছর তারা সাবরা হুমাস ব্র্যান্ডের বাকি অর্ধাংশ কিনে নেয়। পেপসিকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রামন লাগুয়ার্তা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের খাদ্য ও পানীয়ের পোর্টফোলিও পরিবর্তন করছি। এর মাধ্যমে আমরা ভোক্তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর বিকল্প সরবরাহ করতে চাই।”
বর্তমানে প্রি-বায়োটিক সোডার বাজার বেশ দ্রুত বাড়ছে। যদিও বাজার গবেষণা সংস্থা ‘জ্যাপি’র মতে, মাত্র ৫ শতাংশ ভোক্তা নিয়মিতভাবে এই ধরনের সোডা পান করে।
জ্যাপির প্রধান বিপণন কর্মকর্তা নাটালি কেলি জানান, “ব্র্যান্ড পরিচিতি এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে ভোক্তাদের মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করাটা এখনো কঠিন। প্রি-বায়োটিক সোডার কথা অনেকেই শুনেছেন, তবে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা অনেকেরই নেই।”
পপির সাফল্যের পেছনে ‘শার্ক ট্যাংক’ অনুষ্ঠানে এর আবির্ভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। পপি তাদের সোডাকে প্রি-বায়োটিক এবং আপেল সিডার ভিনেগার সমৃদ্ধ হিসেবে বাজারজাত করে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক বলে দাবি করে।
তবে এই দাবির স্বাস্থ্যগত উপকারিতা নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে।
পেপসিকোর এই পদক্ষেপের ফলে বাজারে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কোকাকোলাও তাদের প্রি-বায়োটিক সোডার লাইন ‘সিম্পলি পপ’ চালু করেছে। এছাড়াও, স্পিন্ড্রিফট সোডা এবং ব্লুম নিউট্রিশনের মতো অন্যান্য ব্র্যান্ডও এই বাজারে প্রবেশ করেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বড় সোডা প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর জন্য প্রি-বায়োটিক সোডার বাজার এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, পপির জনপ্রিয়তা বিতর্কিতও হয়েছে।
সম্প্রতি, সুপার বোল-এর সময় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ আকারের পপি ভেন্ডিং মেশিন উপহার দেওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এর সমালোচনা করেছেন।
ভোক্তা গবেষণা বলছে, ২০২৯ সাল নাগাদ এই স্বাস্থ্যকর পানীয়ের বাজার ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। বর্তমানে, ওলিপপ নামক একটি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে গত মাসে প্রায় ১.৮৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যায়ন অর্জন করেছে।
ভবিষ্যতে কে বেশি সফল হবে, পেপসিকো নাকি কোকাকোলা, তা সময়ই বলবে। তবে স্বাস্থ্যকর পানীয়ের এই ধারা কত দিন স্থায়ী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন