উত্তর মেসিডোনিয়ার একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দেড়শতাধিক মানুষ।
কোকানি শহরের ‘ক্লাব পালস’-এ গত রবিবার রাতে কনসার্টের সময় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। খবর অনুযায়ী, আতশবাজি পোড়ানোর কারণেই আগুনের সূত্রপাত হয়।
এই ঘটনায় দেশটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, ক্লাবের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে, যা নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার কোকানি এবং রাজধানী স্কোপজেতে বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে কিছু প্রতিবাদ সহিংস রূপ নেয়। কোকানির বিক্ষোভকারীরা একটি ভ্যান উল্টে দেয় এবং পৌর ভবনে পাথর নিক্ষেপ করে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাঞ্চে তোশকোভস্কি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমরা আবারও সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই তদন্তকারীরা তাদের কাজ করুক এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।
তদন্তে জানা গেছে, ক্লাবটির ধারণক্ষমতা ছিল ২৫০ জনের, কিন্তু ঘটনার সময় সেখানে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি লোক ছিল।
ক্লাবে জরুরি নির্গমন পথ, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং স্প্রিংকলার ছিল না। এছাড়া, ক্লাবের নির্মাণে দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছিল।
ফলে, আগুন লাগার পর আতঙ্কিত লোকজন দ্রুত বের হতে গিয়ে পদদলিত হয়।
এই দুর্ঘটনার পর প্রতিবেশী দেশ সার্বিয়া ও বুলগেরিয়া উত্তর মেসিডোনিয়ার প্রতি সংহতি জানিয়ে মঙ্গলবার শোক দিবস পালন করেছে।
চেক রিপাবলিক, সার্বিয়া এবং ইসরায়েলের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা করতে পৌঁছেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাঠাতে সাহায্য করছে।
আহতদের মধ্যে প্রায় ৫০ জনের চিকিৎসা চলছে, যাদের বেশিরভাগই প্রতিবেশী দেশগুলোতে রয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
এই ঘটনার জেরে উত্তর মেসিডোনিয়ায় দুর্নীতির বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। ইইউ এটিকে দেশটির সদস্যপদ লাভের পথে একটি প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
কর্তৃপক্ষের ধারণা, ক্লাবের মালিকরা নিরাপত্তা বিধি এড়াতে কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছিল।
সরকার এরই মধ্যে দেশটির সকল নাইটক্লাব ও বিনোদন কেন্দ্রে নিরাপত্তা বিষয়ক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস