ফরাসি রাজনীতিবিদ র্যাফায়েল গ্লুক্সমান সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্বাধীনতা স্তম্ভ (Statue of Liberty) ফেরত চেয়েছেন, যা ফ্রান্সের পক্ষ থেকে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে আমেরিকাকে দেওয়া হয়েছিল।
গ্লুক্সমান-এর মতে, কিছু আমেরিকান ‘স্বৈরাচারীদের পক্ষ নেওয়ার’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা স্বাধীনতা স্তম্ভের আদর্শের পরিপন্থী।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য গ্লুক্সমান-এর এই মন্তব্যের কারণ হলো, তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে পরিবর্তন এসেছে, বিশেষ করে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার চলমান দ্বন্দ্বে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য ভূমিকার কারণে।
গ্লুক্সমান-এর মতে, যুক্তরাষ্ট্র এখন স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও স্বৈরাচার প্রতিরোধের মতো স্তম্ভগুলোর প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে না।
গ্লুক্সমানের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কারণেই ফরাসিরা এখনো জার্মান ভাষায় কথা বলে না।
তাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
পরে, গ্লুক্সমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ‘মার্কিন বীরদের’ প্রতি তার ‘চিরন্তন’ কৃতজ্ঞতা রয়েছে।
তবে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনা এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের মতবিরোধের সমালোচনা করেন।
গ্লুক্সমান-এর মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো স্বাধীনতা স্তম্ভের ধারণার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।
গ্লুক্সমান স্পষ্ট করেছেন, তিনি চান না কেউ স্বাধীনতা স্তম্ভ চুরি করুক। তার মতে, স্তম্ভটি যুক্তরাষ্ট্রের, তবে এর আদর্শ সবার।
তিনি আরও বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এই আদর্শকে সম্মান না করে, তবে ইউরোপ সেই আদর্শের আলো হাতে তুলে নেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গ্লুক্সমান-এর এমন মন্তব্য ফরাসি রাজনীতিতে তার ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়। তিনি প্লেস পাব্লিক নামের একটি দলের সহ-সভাপতি, এবং ধারণা করা হচ্ছে ২০২৭ সালের ফরাসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: CNN