দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গবেষণা দলের একজন সদস্যের বিরুদ্ধে, যিনি অ্যান্টার্কটিকার একটি দুর্গম ঘাঁটিতে কাজ করছিলেন, তাঁর সহকর্মীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এই ঘটনার জেরে ওই ব্যক্তিকে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে অ্যান্টার্কটিকার সানে-৪ (SANAE IV) ঘাঁটিতে, যা কুইন মড ল্যান্ডে অবস্থিত। এই ঘাঁটিতে থাকা নয় জন সদস্যের মধ্যে বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও প্রকৌশলীও রয়েছেন। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দলটি প্রায় ১৩ মাস ধরে সেখানে আটকে আছে, যা তাদের জন্য এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আগামী ডিসেম্বরে সেখানে রসদ সরবরাহের জন্য জাহাজ যাওয়ার কথা রয়েছে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, একদল সদস্য কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ইমেইলে অভিযোগ করেছেন যে অভিযুক্ত ব্যক্তি দলের প্রধানকে আক্রমণ করেছেন এবং তাদের হুমকি দিয়েছেন। ইমেইলে সাহায্যের আবেদন করে বলা হয়, “তার আচরণ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এবং প্রতিনিয়ত ভাবছি, আমি কি পরবর্তী শিকার?”
দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ মন্ত্রণালয় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, তারা অভিযোগের তদন্ত করছে এবং দলটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি মনোবৈজ্ঞানিক মূল্যায়নে সহযোগিতা করেছেন এবং ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
অ্যান্টার্কটিকার মতো চরম পরিবেশে কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর আগে, দক্ষিণ আফ্রিকার মেরিয়ন দ্বীপে অবস্থিত আরেকটি গবেষণা ঘাঁটিতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৭ সালে, এক গবেষক দলগত বিবাদের জেরে কুঠার দিয়ে এক সহকর্মীর ঘর ভেঙে ফেলেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন (National Science Foundation) -এর একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সেখানকার অ্যান্টার্কটিক প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া ৫৯ শতাংশ নারী গবেষণা কর্মী হয়রানি বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এ ধরনের ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, চরম প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করা কর্মীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা অত্যন্ত জরুরি। কর্তৃপক্ষের উচিত কর্মীদের জন্য উপযুক্ত মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস