শিরোনাম: শোক আর প্রত্যাশার গল্প: ইংল্যান্ডের তারকা রাগবি খেলোয়াড় মেগ জোনস
গত এক বছরে ব্যক্তিগত জীবনে গভীর শোকের সাক্ষী হয়েছেন ইংল্যান্ডের রাগবি তারকা মেগ জোনস। বাবা ও মাকে হারানোর বেদনা বুকে নিয়েও খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মাঠের লড়াইয়ে যেমন তিনি দৃঢ়চেতা, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনেও শোককে জয় করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য সাহস জুগিয়েছেন এই নারী।
মেগ জোনসের বাবা ছিলেন ওয়েলসের নাগরিক, পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। মা ছিলেন একজন সিনিয়র নার্স। গত বছর, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে, তার বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সারের চতুর্থ স্তরে ছিলেন তিনি। এর কয়েক মাস পরেই আগস্টে বাবার মৃত্যু হয়।
বাবার মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই, ডিসেম্বরে মা’কে হারান মেগ। মায়ের মৃত্যুর কারণ ছিল অ্যালকোহল আসক্তি।
বাবা-মায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল গভীর। বাবা খেলা দেখতে ভালোবাসতেন। বিশেষ করে রাগবি খেলার প্রতি তার ছিল অন্যরকম টান। মেয়ের খেলা দেখে তিনি গর্বিত হতেন।
মেয়ের খেলা উপভোগ করার জন্য তিনি সবসময় মুখিয়ে থাকতেন। বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ার পর, মেগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি বাবার স্বপ্ন পূরণ করবেন। তাই মানসিক কষ্টের মধ্যেও তিনি খেলা চালিয়ে যান।
মা’কে নিয়ে বলতে গিয়ে মেগ জানান, মা ছিলেন খুবই সংবেদনশীল একজন মানুষ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নার্সিং পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মানুষের সেবা করাই ছিল তার জীবনের ব্রত।
কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো তিনি সবসময় এড়িয়ে যেতেন। অ্যালকোহলের প্রতি আসক্তি তাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে। মেগ চেষ্টা করেছিলেন মাকে এই আসক্তি থেকে বের করে আনতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সফল হননি।
বর্তমানে মেগ ইংল্যান্ড দলের সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মাঠে তার নেতৃত্ব দেওয়ার ধরন মুগ্ধ করার মতো। তিনি তার দুর্বলতাগুলো প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করেন না, যা অন্যদের অনুপ্রাণিত করে।
দলের অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ।
আসন্ন সময়ে, ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার পাশাপাশি, মেগ জোনস ‘দ্য লিভিং রুম’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি মাদকাসক্তিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করে থাকে।
ভবিষ্যতে তিনি নিজের পরিবার শুরু করতে চান এবং ভালোবাসার মাধ্যমে জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চান।
মেগ জোনসের জীবনের এই গল্প আমাদের শোকের গভীরতা এবং সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর অদম্য ইচ্ছাশক্তি সম্পর্কে ধারণা দেয়। শোককে জয় করে কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়, মেগ জোনস যেন তারই এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান