ফিলাডেলফিয়া শহরের তিনজন অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিচার শুরু হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ১৯৯১ সালের একটি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পুনর্রায় বিচারে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই মামলায় অভিযুক্তরা হলেন মার্টিন ডেভলিন, ম্যানুয়েল স্যান্টিয়াগো এবং ফ্রাঙ্ক জাস্ট্রেমবস্কি। তাঁদের বয়স এখন ৭৫ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে।
মামলার সূত্রপাত হয় ১৯৯১ সালে সংঘটিত হওয়া এক বৃদ্ধ মহিলার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এই ঘটনায় ২০ বছর বয়সী এক প্রতিবেশী, অ্যান্থনি রাইটকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে রাইটের নির্দোষ প্রমাণ হয় এবং তিনি প্রায় দুই দশক কারাবন্দী থাকার পর মুক্তি পান।
এরপর ২০১৬ সালে পুনরায় এই মামলার বিচার শুরু হয়। পুনরায় বিচারের সময় অভিযুক্ত গোয়েন্দাদের সাক্ষ্যগ্রহণে মিথ্যাচারের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা রাইটের স্বীকারোক্তির বিষয়ে মিথ্যা বলেছেন।
রাইটের আইনজীবীরা দাবি করেন, তাঁর কাছ থেকে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ডেভলিন নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যিনি দাবি করেছিলেন তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ৯ পৃষ্ঠার স্বীকারোক্তি লিখেছিলেন, কিন্তু বিচারের সময় তিনি তা করতে ব্যর্থ হন।
বর্তমানে ফিলাডেলফিয়ার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ল্যারি ক্রাসনার এই মামলাটি পরিচালনা করছেন। তিনি পুলিশি জবাবদিহিতার ওপর জোর দিয়েছেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে স্যান্টিয়াগো এবং ডেভলিনের বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি নিয়ে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া, জাস্ট্রেমবস্কির বিরুদ্ধে ডিএনএ বিষয়ক তথ্য গোপন এবং ভিকটিমের পোশাক রাইটের ঘরে পাওয়ার বিষয়ে মিথ্যা বলার অভিযোগ রয়েছে। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তদের সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
অভিযুক্তদের আইনজীবীরা এই মামলাটি খারিজ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিলেন, তবে আদালত এখনো পর্যন্ত কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। অন্যদিকে, রাইটকে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সিটি প্রশাসন। ল্যারি ক্রাসনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রায় ৫০টি মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিকে মুক্ত করেছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস