গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন করে বিমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরাঞ্চলের শহরগুলো থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে জীবন বাঁচানোর তাগিদে তাঁরা নিকটবর্তী জাবালিয়া শহরের দিকে ছুটে যান।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উত্তর গাজার বেইত হানুন এবং দক্ষিণের খুজা ও আবাসন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওই এলাকাগুলোকে ‘বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র অ্যাভিচায় আদ্রাঈ তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে এক বার্তায় জানান, ‘আপনাদের নিরাপত্তার জন্য, অবিলম্বে গাজা শহরের পশ্চিমাঞ্চলে এবং খান ইউনিসের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যান।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৫৬২ জন। প্রায় দুই মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর এই হামলা চালানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ চাপা পড়ে আছেন এবং তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
গত ১৯শে জানুয়ারী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে চালানো এটাই সবচেয়ে বড় হামলা। গাজার মিডিয়া অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে পরিবারের সবাই ছিলেন।
ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী দলগুলো হতাহতদের হাসপাতালে নিতে হিমশিম খাচ্ছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই নৃশংস গণহত্যা আবারও প্রমাণ করে যে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী কেবল হত্যা, ধ্বংস ও গণহত্যার ভাষা বোঝে।’
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে গাজায় প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৮,৫৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১,১২,০৪১ জন আহত হয়েছেন।
গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্যমতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাঁদের মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা