যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র গরম: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রস্তুতিতে বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বাড়ছে, যার ফলে বিভিন্ন দেশে চরম আবহাওয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ওপর।
উন্নত দেশগুলোও এই পরিবর্তনের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। সম্প্রতি, গ্রীষ্মকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র গরমের কারণে সেখানকার জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
দেশটির ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (National Weather Service) এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention) এর তথ্য অনুযায়ী, গ্রীষ্মের এই সময়ে অতিরিক্ত গরমের কারণে জরুরি বিভাগের সংখ্যা বাড়ছে এবং হিট স্ট্রোকের মতো ঘটনাগুলো ঘটছে, যার ফলস্বরূপ অনেক মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছে এবং সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করছে। তারা তাপমাত্রার তীব্রতা, সময়কাল এবং জনগণের উপর এর সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনা করে সতর্কতা জারি করছে।
উদাহরণস্বরূপ, গত বছর ২১শে জুন থেকে ২২শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে, গড়ে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ তীব্র গরমের সতর্কতার মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন। এই বছরও পরিস্থিতি ভিন্ন নয়।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশাল অংশে এই গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহের সতর্কতা, নির্দেশিকা এবং সতর্কতা জারি করা হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ার কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও বেশি সাধারণ, তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। রাতের বেলাতেও তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে না, যা মানুষকে স্বস্তি দিতে পারছে না।
এর ফলস্বরূপ, গরমের রেকর্ডও ভাঙছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য তাপমাত্রা ভাঙার পূর্বাভাস দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অনেক স্থানে তাপমাত্রা নতুন রেকর্ড তৈরি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা নেওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদের দেশেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে।
গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং গরমের কারণে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, আমরাও দীর্ঘ এবং তীব্র তাপপ্রবাহের অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো, বাংলাদেশেরও তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। জনগণকে সচেতন করা, স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করা এবং জরুরি অবস্থার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা অপরিহার্য।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস নিয়মিতভাবে প্রচার করা এবং তাপপ্রবাহের সময় মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করতে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা, এবং এর প্রভাব থেকে কেউই মুক্ত নয়। তাই, উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, আমাদের নিজেদের প্রস্তুতি আরও জোরদার করতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন