মার্চ ম্যাডনেস: নারী বাস্কেটবল দলগুলোর জন্য আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা
ক্রীড়া জগতে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের দাবিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র।
ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন (NCAA)-এর নারী বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট ‘মার্চ ম্যাডনেস’-এ অংশ নেওয়া দলগুলোর জন্য আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত এই সুবিধা কেবল পুরুষ দলের জন্য বরাদ্দ ছিল।
খবরটি নিঃসন্দেহে ক্রীড়া জগতে লিঙ্গ সমতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এই বছর থেকে, টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি নারী দল ‘ইউনিট’ হিসেবে পরিচিত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবে। এই ‘ইউনিট’-এর ধারণাটি বেশ জটিল হলেও এর মূল অর্থ হলো, কোনো নারী দল টুর্নামেন্টে যতগুলো ম্যাচ খেলবে, তাদের কনফারেন্স সেই অনুপাতে অর্থ লাভ করবে।
প্রতিটি ম্যাচের জন্য কনফারেন্সগুলো প্রায় ১ লক্ষ ১৩ হাজার মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা) পাবে।
উদাহরণস্বরূপ, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী বাস্কেটবল দল গত বছর টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল, কিন্তু তারা বা তাদের লীগ কোনো অর্থ পায়নি। তবে এবার থেকে তারা এই সুবিধা পাবে।
এছাড়াও, নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটির (UNC) গ্রিন্সবোরো, উইলিয়াম ও মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দলগুলোও এই আর্থিক সুবিধা থেকে উপকৃত হবে।
এই পরিবর্তনের ফলে দলগুলো উন্নত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা এখন চার্টার্ড ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবে এবং তাদের জন্য উন্নত মানের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
UNC গ্রিন্সবোরো’র কোচ ট্রিনা প্যাটারসন বলেন, “আমরা সবাই একই ‘মার্চ ম্যাডনেস’-এ খেলছি, তাই পুরুষ ও নারী উভয় দলের জন্যই সুযোগ-সুবিধা সমান হওয়া উচিত।
আমরা অবশেষে একটি ‘ইউনিট’ পাচ্ছি!”
এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে নারী ক্রীড়াবিদদের দীর্ঘদিনের লড়াই।
২০২০ সালে সেডোনা প্রিন্স নামের একজন খেলোয়াড়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে, যেখানে পুরুষ ও নারী দলের সুযোগ-সুবিধার মধ্যেকার পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছিল।
সেই ঘটনার পর থেকেই নারী বাস্কেটবলকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জোরালো হয়।
উইলিয়াম ও মেরি’র কোচ এরিন ডিকাসন ডেভিস বলেন, “নারী বাস্কেটবল দীর্ঘদিন ধরে সমতার জন্য লড়াই করছে।
অবশেষে এই পরিবর্তন আসায় আমি খুব আনন্দিত।”
এই পরিবর্তনের ফলে খেলোয়াড় এবং কোচদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে।
কলম্বিয়া দলের খেলোয়াড় পেরী পেইজ বলেন, “আমরা পুরো মৌসুম জুড়েই বিষয়টি উপভোগ করেছি।
এখন আমাদের স্কুলের জন্য অর্থ উপার্জন করতে পারাটা দারুণ।”
এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে নারী ক্রীড়ার উন্নতিতে সহায়তা করবে এবং বিশ্বজুড়ে লিঙ্গ সমতার ধারণা আরও শক্তিশালী করবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস